বিজ্ঞাপন
কিয়েভ পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার ভোরে রাজধানীতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুজন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছেন। শহরের মেয়র ভিটালি ক্লিৎসকো টেলিগ্রামে এই হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ইউক্রেনের স্টেট ইমার্জেন্সি সার্ভিস জানিয়েছে, হামলায় একটি অনাবাসিক ভবনে আগুন লেগে যায় এবং অন্য স্থানে বাধা দেওয়া ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ খোলামেলা জায়গায় পড়লে আশেপাশের ভবনের জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এদিকে, দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে রুশ হামলায় আরও দুজন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত আঞ্চলিক গভর্নর ভ্লাদিস্লাভ হাইভানেনকো। তিনি জানান, হামলায় বেশ কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং এবং ব্যক্তিগত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর মোট ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৬২টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে ৪টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৫০টি ড্রোন সফলভাবে ভূপাতিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা রাতারাতি রাশিয়ার আকাশসীমায় ১২১টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
এই হামলার পরপরই প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেছেন, এই ধরনের হামলা প্যাট্রিয়ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাকে তীব্রভাবে বাড়িয়ে তোলে। সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) তিনি লিখেছেন, "আমাদের শহরগুলোকে এই ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হওয়ার জন্য আমরা প্যাট্রিয়ট সিস্টেমের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিই। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে অংশীদাররা... সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আমরা যা আলোচনা করেছি তা বাস্তবায়ন করুন।" জেলেনস্কি বিশেষ করে শহরগুলোর সুরক্ষায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ২৫টি প্যাট্রিয়ট সিস্টেম কেনার আশা করছেন।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধ বন্ধে একদিকে যেমন সামরিক সহায়তা চাওয়া হচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে কূটনৈতিক তৎপরতারও খবর পাওয়া যাচ্ছে। হামলার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি লন্ডনে দুই ডজন ইউরোপীয় নেতার সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের আয়োজিত এই বৈঠকের লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর চাপ বাড়ানো এবং ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা নিশ্চিত করা।
বৈঠকে শীত মৌসুম হওয়ায় ইউক্রেনের পাওয়ার গ্রিড রক্ষা, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং রাশিয়ার গভীরে আঘাত হানতে সক্ষম দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র (যেমন টোমাহক) সরবরাহ নিয়ে আলোচনা হয়। উল্লেখ্য, ন্যাটো প্রধান এবং ইউরোপীয় নেতারা সম্প্রতি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো এবং দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহ ত্বরান্বিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এরই মধ্যে, পুতিনের বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ক দূত কিরিল দিমিত্রিয়েভ শুক্রবার ওয়াশিংটনে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে তিনি সিএনএনকে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন একটি 'কূটনৈতিক সমাধানের খুব কাছাকাছি' রয়েছে। যদিও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মঙ্গলবারই স্পষ্ট করেছেন যে, রাশিয়া অবিলম্বে কোনো যুদ্ধবিরতির পক্ষে নয়।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...