ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার দুই সপ্তাহের মাথায় ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে উপমহাদেশ। বুধবার (৭ মে) ভোরে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর দাবি করেছে ভারত। ইসলামাবাদের দাবি অনুযায়ী, এই হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছে। তারা পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, ‘জবাব দেওয়া হচ্ছে এবং আরও কঠিন জবাব আসবে।’ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় বেশ কয়েকজন বিদেশি পর্যটক প্রাণ হারান। ভারতের অভিযোগ, এই হামলার পেছনে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর হাত রয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় বাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে ‘টার্গেটেড স্ট্রাইক’ চালায় বলে দাবি করছে নয়াদিল্লি। যদিও পাকিস্তান বলছে, এটি সরাসরি তাদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ।
বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়ায় উদ্বেগ ও সংযমের আহ্বান
এই ঘটনার জেরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এটা খুবই লজ্জাজনক। আমি মাত্রই ঘটনা সম্পর্কে শুনলাম। বহু দশক ধরে তারা (ভারত-পাকিস্তান) লড়াই করে আসছে। আশা করছি, এই সংঘাত খুব দ্রুত শেষ হবে।”
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, “ভারত ও পাকিস্তানের চলমান পরিস্থিতি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের সঙ্গে আমিও একমত। শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে আমরা দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে কাজ করব।”
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র জানান, “ভারতের সেনা অভিযান আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করেছে—এটি নিয়ে মহাসচিব গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সামরিক সংঘাতের ঝুঁকি এখন বিশ্ব বহন করতে পারবে না।”
জাপানের প্রতিক্রিয়াও এসেছে। দেশটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি বলেন, “কাশ্মীরের ঘটনা একটি সন্ত্রাসী হামলা, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে উদ্বিগ্ন যে এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে। আমরা সংলাপ ও ধৈর্যের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানাচ্ছি।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের এই অভিযান যদি সত্য হয়, তাহলে দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠতে পারে। সীমান্তে উত্তেজনা, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার সম্মিলিত অভিঘাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
এই মুহূর্তে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রয়োজন দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা হ্রাস ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের উদ্যোগ।
