বিজ্ঞাপন
আজ ২৯ জুলাই মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নিটোর (জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে সে। তরুণ এক প্রাণের এমন পরিণতিতে শোকাহত তার পরিবার, শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহল ও স্থানীয় জনসাধারণ। একইসঙ্গে আলো তুলেছে বেশকিছু গুরুতর প্রশ্ন কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল আলো? কতটা মানসিক চাপে ছিল সে? এর দায়ভার কাদের?
গত সপ্তাহে, স্কুল চলাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ আবারও আলোকে ক্লাস থেকে ডেকে নেন এবং কথিত এক পুরনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিভাবক আনার জন্য চাপ দেন। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন মাস আগে ভূমি অফিস আয়োজিত এক কুইজ প্রতিযোগিতার পর কয়েকজন ছাত্রী স্থানীয় মসজিদে নূর এলাকায় কিছু সময় অবস্থান করেছিল। সেই সময় তাদের সঙ্গে বর্তমান প্রধান শিক্ষকের দেখা হয় এবং বিষয়টি তখনকার প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমানকে জানানো হলে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়। তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলোকে কেন্দ্র করে একাধিকবার তিরস্কার করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সহপাঠীরা জানিয়েছেন, আলোকে প্রায়ই ক্লাসের সামনে ডেকে শাসানো হতো এবং অভিভাবক আনতে চাপ দেওয়া হতো।
ঘটনার দিন, হাসিমুখে কাবাডির মাঠে দাগ কেটে লিডারশিপের দায়িত্ব নেওয়া সেই মেয়েটিই কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে স্কুল ভবনের ছাদে উঠে যায় এবং সেখান থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
আলোর বড় বোন আঁখি প্রশ্ন তুলেছেন, স্কুল ফর্মে আমাদের ফোন নম্বর থাকলেও আমাদের ডাকা হয়নি কেন? শুধু আমার ছোট বোনকেই কেন এমনভাবে বারবার চাপ দেওয়া হলো? এটা কি শিক্ষকসুলভ আচরণ?
নূর মোহাম্মদ বলেছেন, আমি শুধু তার অভিভাবককে আনতে বলেছিলাম। কোনো রকম মানসিক চাপে ফেলার উদ্দেশ্য ছিল না। তবে প্রশ্ন রয়ে যায় কেন একজন কিশোরী এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেয়?
আলো আর নেই, কিন্তু আলোড়ন রয়ে গেল, আলোর মৃত্যুর খবরে সামাজিক মাধ্যমে শোক ও ক্ষোভের ঝড় উঠেছে। স্থানীয় সাংবাদিক, শিক্ষক, অভিভাবক, মানবাধিকার কর্মীরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের দাবি তুলেছেন।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...