Logo Logo

এই মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক চুক্তি চূড়ান্ত হচ্ছে


Splash Image

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার কাজ চলছে, যার খসড়া ইতিমধ্যেই প্রস্তুত পর্যায়ে রয়েছে। আগামী আগস্ট মাসের মধ্যেই চুক্তিটি চূড়ান্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা।


বিজ্ঞাপন


চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্যের প্রবেশাধিকার আরও সহজ হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেওয়া শর্তাবলির মধ্যে রয়েছে—চীনের বিকল্প হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক সরঞ্জাম, বেসামরিক উড়োজাহাজ, যন্ত্রাংশ, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), ভোজ্যতেল ও কৃষিপণ্য আমদানির উপর জোর দেওয়া। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের মান-সনদ (স্ট্যান্ডার্ড) বিনা বাধায় মেনে নেওয়া এবং মার্কিন গাড়ি ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে কোনো বাড়তি পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করার বিষয়েও চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে।

বিশেষভাবে যুক্তরাষ্ট্র চায়, বাংলাদেশে তাদের গাড়ির বাজারপ্রবেশ আরও সহজ করা হোক এবং ইপিজেডসহ (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা) সব কারখানায় শ্রমিকদের সংগঠন গঠনের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হোক। একইসঙ্গে, শ্রমিক অধিকার ইস্যুতে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টিও শর্ত হিসেবে রাখা হয়েছে।

তবে বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে আলোচনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, “বিমানের পরিচালনক্ষমতা না বাড়িয়ে শুধু উড়োজাহাজ কিনে বিশেষ লাভ হবে না। বোয়িং হয়তো ২০৩৭ সালের আগে সরবরাহ শুরুও করতে পারবে না। সুতরাং এই বিষয়টি আলোচনার মূল ফোকাসে নেই।”

এই আলোচনার পটভূমিতে একটি বিতর্কও তৈরি হয়েছে। আলোচনার কিছু গোপন তথ্য ফাঁস হওয়ার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর দ্বিতীয় সচিব মুকিতুল হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, তিনি রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছেন এবং শৃঙ্খলাবিরোধী আচরণে জড়িত থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বার্ষিক প্রায় ৬০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, যা অনেকাংশে বাংলাদেশের পক্ষে অসুবিধাজনক। সেই ঘাটতি কিছুটা কমাতে কৃষিপণ্য ও জ্বালানি খাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এই বাণিজ্য ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO)-কে প্রস্তাবিত চুক্তির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করার কথাও চুক্তির খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই চুক্তি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে নতুন গতি দেবে এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, চীনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বাণিজ্যিক নির্ভরতার জায়গা থেকে বেরিয়ে আসা একদিকে যেমন কৌশলগতভাবে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে, অন্যদিকে তাতে জিও-রাজনৈতিক ভারসাম্যও নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...