বিজ্ঞাপন
খেজুর—একটি পুষ্টিকর, সুস্বাদু এবং ওষুধি গুণে সমৃদ্ধ ফল। এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি, তবে ইসলামের আলোকে খেজুরের উপকারিতা নিয়ে অনেক বিস্ময়কর হাদিস রয়েছে।
বিশেষ করে মদিনার বিখ্যাত ‘আজওয়া খেজুর’ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কিছু হাদিস আমাদের সামনে এমন কিছু বাস্তব উপকারিতা তুলে ধরেছে, যা শুধু শারীরিক নয়, বরং আত্মিক দিক থেকেও উপকারী হতে পারে।
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মদিনার উচ্চভূমিতে উৎপন্ন আজওয়া খেজুরের মধ্যে রোগের শিফা রয়েছে। আর প্রথম ভোরে তা খাওয়া হলে এটি বিষের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে’ (সহিহ মুসলিম: ৫১৬৮)।
অন্য এক হাদিসে হজরত সাদ (রা.) বলেন, ‘আমি নবীজি (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি ভোরে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন কোনো বিষ বা জাদুটোনা তার ক্ষতি করতে পারবে না’ (সহিহ বুখারি: ৫৪৪৫)।
এছাড়া, হজরত আলি (রা.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন সাতটি আজওয়া খেজুর খায়, তার পাকস্থলীর প্রতিটি রোগ দূর হয়ে যায়’ (কানজুল উম্মাল: ২৮৪৭২)।
খেজুরের এই উপকারিতা শুধুই হাদিসে নয়, আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানেও অনেকাংশে প্রমাণিত। খেজুরে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি, ফাইবার, পটাশিয়াম, আয়রন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ নানা পুষ্টি উপাদান, যা শরীরের শক্তি বাড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
ইসলামিক ঐতিহ্যে খেজুরের গুরুত্ব এতটাই ছিল যে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ইফতারেও খেজুর ছিল প্রধান খাদ্য। হজরত আনাস (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) কাঁচা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। না পেলে শুকনো খেজুর, সেটাও না পেলে পানি’ (তিরমিজি)।
অতএব, প্রতিদিন সকালে সাতটি খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে তা শুধু শরীর নয়, আত্মাও উপকৃত হতে পারে। বিশেষ করে যারা আজওয়া খেজুর সংগ্রহ করতে পারেন, তারা নিয়ম করে সকালবেলা এটি খেলে হাদিসে বর্ণিত ফজিলত অর্জন করতে পারেন।
খেজুর শুধু খাবার নয়, এটি একটি সুন্নতি অভ্যাসও। তাই খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন খেজুর রাখা একাধারে সুস্বাস্থ্য, সুন্নাহ পালন এবং আত্মিক প্রশান্তির একটি দারুণ উপায়।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...