ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভার মসজিদপাড়া গ্রামে নববিবাহিত এক যুবকের নির্মম হত্যাকাণ্ডে শোক ও চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার (১৬ মে) দিবাগত রাতে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে, পরে গলাটিপে ও বালিশচাপা দিয়ে মেহদি হাসান (২৭) নামের এক যুবককে হত্যা করেন তার স্ত্রী জান্নাত আক্তার (১৮)। বিয়ের মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় ঘটে যাওয়া এই লোমহর্ষক ঘটনা রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারের পর জান্নাত আক্তার জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে, পারিবারিক কলহের কারণে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। জান্নাতের দাবি, মেহদি বিয়ের পর থেকেই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। শুক্রবার বিকেলে অসুস্থতার অজুহাতে স্বামীকে দিয়ে স্থানীয় ফার্মেসি থেকে ঘুমের ওষুধ আনিয়ে নেন তিনি। পরে রাতের খাবারের পর কোমলপানীয়তে সেই ওষুধ মিশিয়ে মেহদিকে অচেতন করে ফেলেন। এরপর গলায় চাপ ও মুখে বালিশ চেপে শ্বাসরোধ করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন বলে পুলিশকে জানান জান্নাত।
তবে নিহত মেহদির পরিবার এক ভিন্নতর অভিযোগ তুলেছে। তার বড় ভাই আবু কালাম ও মা বকুল আক্তার দাবি করেন, জান্নাত আক্তারের সঙ্গে বিয়ের আগ থেকেই এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। সেই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে পরিকল্পিতভাবে মেহদিকে হত্যা করা হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। তারা ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ছমিউদ্দিন জানান, “ঘটনার পরপরই আমরা জান্নাত আক্তারকে আটক করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাকে আদালতে পাঠানো হবে।”
স্থানীয়রা জানান, নববিবাহিত এই দম্পতির মধ্যে বিগত কয়েকদিন ধরেই মনোমালিন্য চলছিল। প্রায়শই তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত। তবে এমন ভয়ঙ্কর পরিণতি কল্পনাও করতে পারেননি কেউ।
ঘটনার পর আখাউড়া শহরজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তদন্তের স্বার্থে জান্নাত আক্তারের প্রেমিকের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
