বিজ্ঞাপন
আটককৃতের নাম রাজা চোকদার (৩৮), পরিচিত ওরফে কিলার রাজা। তিনি জলিরপাড় ইউনিয়নের প্রভাবশালী এক চেয়ারম্যানের ভাগ্নে এবং মোহাম্মদ আলী চোকদারের ছেলে।
মুকসুদপুর থানার সিন্দিয়া ঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আলমগীর হোসেন জানান, “গোপন সূত্রের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে পরিত্যক্ত একটি বাড়ি থেকে মাদক সেবনরত অবস্থায় রাজা চোকদারকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় মোট ৭টি অভিযোগ রয়েছে। গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপার ও থানার কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে আমরা চাঞ্চল্যকর গৌতম হত্যা মামলার তদন্তে রয়েছি এবং বিজ্ঞ আদালতে রিমাণ্ডের আবেদন করেছি।”
স্থানীয়রা জানায়, রাজা চোকদার নিয়মিত স্কুল এলাকায় মাদকের আসর ও জুয়ার আয়োজন করতো। নৈশপ্রহরী গৌতম বাঁধা দেওয়ায় তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়, যা হত্যার মূল কারণ হতে পারে। এলাকাবাসী আরও জানান, রাজা চোকদার বহু বছর ধরে চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও অসামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত।
এর আগে ২০০৫ সালে রাজা চোকদার ওই স্কুলের একজন প্রাক্তন ছাত্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী, চাকুরী প্রত্যাশী গৌতম বিশ্বাসকে বাড়ি থেকে ডেকে জে কে এম বি মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাদে নিয়ে নির্যাতন করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করে। পরে শুনেছি মামলায় জামিনে বেরিয়ে সে নিহত গৌতম বিশ্বাসের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাপ দিয়ে সেই মামলার মীমাংসা করেছে।
এ বিষয়ে সরেজমিনে গৌতম বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের সাথে কথা হলে তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে ছেলে হত্যার বিচার না পাওয়ার আক্ষেপ ব্যক্ত করে বলেন, আমার সুস্থ ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কিভাবে মেরে ফেললো ওরা জানিনা। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
জলিরপাড় এলাকায় নিরীহ দু'জনকে হত্যায় পুলিশ সন্দেহভাজন আসামি রাজা চোকদারকে আটক করায় পুলিশের প্রতি এলাকাবাসীর আস্থা বেড়েছে এবং খুনিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করার জোর দাবী জানিয়েছেন নিহতের পরিবার সহ এলাকার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।
উল্লেখ্য, জে, কে, এম, বি মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী গৌতম গাইন প্রতিদিনের ন্যায় গত ০৯/০৭/২০২৫ ইং তারিখে
রাতে স্কুল পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিজের পরিচালিত মুদি দোকান থেকে রওনা দিয়ে নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে তাঁর পরিবার তাকে খুঁজে না পেয়ে গত ১০/০৭/২০২৫ ইং তারিখে মুকসুদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে গত ১১/০৭/২০২৫ ইং তারিখে গোপালগঞ্জ সদর থানাধীন মধুমতি নদীর কংশুর খেয়াঘাটে গলায় গামছা প্যাঁচানো ভাসমান অবস্থায় গৌতম গাইনের লাশ উদ্ধার করে বৌলতলী ফাঁড়ির পুলিশ। পরবর্তীতে হত্যার শিকার গৌতম গাইনের স্ত্রী মিলি বৈরাগী মুকসুদপুর থানায় অজ্ঞাত আসামী উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং -২৯, তারিখ ১২ জুলাই ২০২৫।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...