ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
এ যুগান্তকারী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে সৌদির স্বাস্থ্য খাতে খ্যাতনামা আলমুসা গোষ্ঠী, যেখানে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে চীনের এআই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিন-ই (SenseTime Health AI Unit)।
এই ‘এআই ক্লিনিক’ একটি পরীক্ষামূলক পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে চালু হয়েছে, যার মেয়াদ ১৮ মাস। এখানে রোগীরা পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট অনুযায়ী আসবেন এবং প্রাথমিক সেবা গ্রহণ করবেন ‘ডক্টর হুয়া’র কাছ থেকে। আরামদায়ক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে ক্লিনিকে নেই দীর্ঘ লাইন কিংবা অপেক্ষার ঝামেলা।
রোগী ক্লিনিকে প্রবেশের পর এআই চিকিৎসক তাদের সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমে সমস্যার ধরন নির্ণয় করে। এরপর বিভিন্ন উপসর্গ বিশ্লেষণ করে তৈরি করে একটি প্রাথমিক প্রেসক্রিপশন। চূড়ান্তভাবে সেটি অনুমোদন দেন একজন মানব চিকিৎসক, যিনি প্রতিটি ধাপে তদারকি করছেন। ফলে নির্ভরযোগ্যতা ও নিরাপত্তা দুটোই বজায় রাখা হয়েছে।
যদিও এই ক্লিনিকটি পুরোপুরি এআই দ্বারা পরিচালিত নয়, তবুও মানুষের ওপর নির্ভরশীলতা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। ক্লিনিকটিতে রয়েছে নিরাপত্তাকর্মী, সহকারী কর্মী ও চিকিৎসকদের সমন্বিত টিম, যারা প্রতিনিয়ত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন।
তবে বর্তমানে এই প্রযুক্তি কেবলমাত্র আউটডোর রোগীদের জন্য প্রযোজ্য। জরুরি বিভাগে এআই এখনো ব্যবহার করা হচ্ছে না। কারণ, বিশেষজ্ঞদের মতে, জটিল ও তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখনও সম্পূর্ণ প্রস্তুত নয়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ভাষা। ‘ডক্টর হুয়া’কে তৈরি করা হয়েছে বহু ভাষায় দক্ষ করে, যাতে বিভিন্ন দেশের রোগীরাও নির্বিঘ্নে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিন-ই’র সিইও ঝ্যাং শাওদিয়ান বলেন, “এতদিন এআই ছিল চিকিৎসকদের সহকারী, এবার চিকিৎসার মূল দায়িত্বই তুলে দেওয়া হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হাতে।”
তবে প্রযুক্তিটি কতটা সফলভাবে কার্যকর হবে, তা বলবে সময়। চিকিৎসা ব্যবস্থার এই নতুন অধ্যায় কতটা টেকসই হয় এবং সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারে কি না, সেটিই এখন মূল প্রশ্ন।
