সিলেটে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একজন স্বাস্থ্যকর্মী একটি শিশুকে টিকা দিচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
শিশুদের টাইফয়েডের মতো ভয়াবহ রোগের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে সিলেটজুড়ে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় সিলেট বিভাগের প্রায় ৩০ লাখ শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (TCV) দেওয়া হবে। রবিবার (১২ অক্টোবর, ২০২৫) সকালে সিলেটের ব্লু-বার্ড উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে বিভাগীয় পর্যায়ে এবং পরবর্তীতে নগরীর অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খান মো. রেজা-উন-নবী। তিনি বলেন, "শিশুদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। এজন্য তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো শিশু যেন এই ক্যাম্পেইন থেকে বাদ না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে।"
ইউনিসেফ-এর অর্থায়নে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিভাগ, সিলেটের পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম সাইফুল ইসলাম, জাতীয় পুষ্টি পরিষদের মহাপরিচালক ডা. মো. রিজওয়ানুর রহমানসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ সার্ভে ২০২১'-এর তথ্যমতে, দেশে প্রতি বছর প্রায় ৪ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হন এবং প্রায় ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। যার ৭০ শতাংশই ছিল শিশু। তিনি বলেন, "এই পরিসংখ্যান আমাদের শিশুদের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি স্পষ্ট করে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রতিটি শিশুকে টিকার আওতায় আনা গেলে টাইফয়েডের মতো রোগ থেকে তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকবে।" এসময় তিনি যেকোনো ধরনের মিথ্যা তথ্য বা গুজবে কান না দিয়ে অভিভাবকদের নিজ নিজ সন্তানকে টিকা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিভাগে মোট ৩০ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় টিকা পাবে ৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৮০ জন এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এই সংখ্যা ১ লাখ ৬২ হাজার ৫২২ জন। মাসব্যাপী এই কর্মসূচি সফল করতে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কেন্দ্রে একযোগে কাজ করবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে ক্যাম্পেইনটি সফল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...