Logo Logo

‘আমরা ফরিদপুরবাসী’র ব্যানারে ফরিদপুরের কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে এক ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন


Splash Image

ফরিদপুরে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হলো শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের নিয়োগ পরীক্ষার্থীদের। পাশাপাশি আগের রাতে আসা পরীক্ষার্থীদের জন্য করা হয় আবাসন ব্যবস্থা। পরীক্ষা শেষে পানি, জুস, স্যালাইন তুলে দেওয়া হয় পরীক্ষার্থীদের হাতে।


বিজ্ঞাপন


‘আমরা ফরিদপুরবাসী’র ব্যানারে ব্যতিক্রমধর্মী এ আয়োজন করে তরুণদের উদ্যোগে গঠিত ফরিদপুরের কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এর সমন্বয়ক ছিলেন তরুণ স্বেচ্ছাসেবী খায়রুল ইসলাম।

গতকাল শনিবার খাদ্য অধিদপ্তরের উপপরিদর্শক পদে নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। এ পরীক্ষার জন্য শরীয়তপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জের ভেন্যু ছিল ফরিদপুর। এই জেলাগুলো বৃহত্তর ফরিদপুরের অন্তর্গত।

এ নিয়োগ পরীক্ষাকে সামনে রেখে দূরদূরান্ত থেকে আসা পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে দুই দিন আগে গত বৃহস্পতিবার খায়রুল ইসলাম নামের এক ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া পোস্টে বলা হয়, ‘শরীয়তপুর, মাদারীপুরসহ দূরদূরান্ত থেকে যারা ফরিদপুরে পরীক্ষা দিতে আসবেন, তাঁদের থাকার সমস্যা হলে অবগত করুন। যথাযথ মর্যাদায় আমার বাসা ও হোস্টেলে রাখার ব্যবস্থা করব, ইনশা আল্লাহ।’

খায়রুল ইসলাম জানান, এ পোস্ট দেওয়ার পর ওই দুটি জেলার ৪০ জন পরীক্ষার্থী তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা এক দিন আগে গত শুক্রবার ফরিদপুরে চলে আসেন। তাঁদের হাতে লাল গোলাপ তুলে বরণ করে নেওয়া হয়। পাশাপাশি ওই ৪০ জনের আবাসন ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় বিনামূল্যে। এ ছাড়া ফরিদপুরের যেসব কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের আসন পড়েছে, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের দুটি ক্যাম্পাস, হেরিটেজ স্কুল, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টিটিসিসহ সেসব কেন্দ্র শুক্রবার রাতে ঘুরিয়ে দেখানো হয়, যাতে তাঁদের পরীক্ষার হল চিনতে কোনো সমস্যা না হয়।

গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে এ নিয়োগ পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর প্রতিটি কেন্দ্রে ‘আমরা ফরিদপুরবাসী’র পক্ষ থেকে দূরদূরান্ত থেকে আগত দুই শতাধিক পরীক্ষার্থীর হাতে খাবার পানি, জুস, স্যালাইন তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া পরীক্ষা শুরুর আগে তাঁদের মোবাইল ও ব্যাগ সংরক্ষণ করা হয় এবং পরীক্ষার পর তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

এ আচরণে অভিভূত শরীয়তপুরের ডামুড্যার পরীক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ফরিদপুরবাসীর এ আন্তরিক সোহার্দ্যপূর্ণ আচরণে আমি মুগ্ধ। ফরিদপুর শহরটিও অনেক সুন্দর। একসময় আমরা একই জেলার মানুষ ছিলাম। তবে প্রশাসনিক বিভাজনের জন্য আমরা বর্তমানে নতুন জেলার অধিবাসী।’

মাদারীপুরের থেকে আগত পরীক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘ফরিদপুরে পরীক্ষা দিতে এসে আন্তরিকতার প্রাণের যে ছোঁয়া পেয়ে গেলাম, তার কোনো তুলনা নেই। দূর থেকে এসেও একবারের জন্যও মনে হয়নি ভিন্ন কোনো জায়গায় এসেছি।’

‘আমরা ফরিদপুরবাসী’র এ ব্যানারে এ দলে অন্য যেসব তরুণ ছিলেন, তাঁরা হলেন আবরার ফাহাদ, কাজী রিয়াজ, মাহমুদুল হাসান, নিলয় চৌধুরী, পারভেজ হাসান, বাহারুল ইসলাম, আশিকুর রহমান, অমি চৌধুরী, ইয়াসীন মন্ডল, রবিউল ইসলাম, রাহুল ভান্ডারী প্রমুখ।

আবরার ফাহাদ বলেন, সম্প্রতি ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়নের বিরোধিতা করে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফরিদপুর সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক কথা বলেছেন। আমরা আমাদের আচরণের মধ্য দিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি, যেভাবে তারা আমাদের চিত্রিত করার চেষ্টা করছে, সেটি সঠিক পথ নয়। আমরা সবাই বৃহত্তর ফরিদপুরের অধিবাসী। আমরা একই সংস্কৃতি ও চেতনার ধারক-বাহক।’

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...