বিজ্ঞাপন
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে আনতেই এই উদ্যোগ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বরাতে রোববার (১ জুন) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ তেহরানে এই বার্তা পৌঁছে দেন। ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আল বুসাইদি সম্প্রতি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে বৈঠকে প্রস্তাবটির মূল উপাদান তুলে ধরেন।
চুক্তির নির্দিষ্ট শর্তাবলী এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানান, “চুক্তিটি গ্রহণ করাই ইরানের স্বার্থে ভালো। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ইরানকে পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে দেওয়া হবে না।”
এই প্রস্তাব এসেছে এমন এক সময়, যখন জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ-এর রিপোর্টে জানানো হয়, ইরান আবারও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বৃদ্ধি করেছে। বর্তমানে দেশটি ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ৪০০ কেজির বেশি ইউরেনিয়াম মজুদ করে রেখেছে—যা ৯০ শতাংশ অস্ত্র-মানের মাত্রার খুব কাছাকাছি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম থেকে ১০টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি সম্ভব, যদি আরও পরিশোধন করা হয়। যদিও ইরান বরাবরই দাবি করে এসেছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ওমানের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পর্দার আড়ালে আলোচনা চলছে। দুই পক্ষই আলোচনার বিষয়ে আশাবাদী হলেও মূল বিতর্ক ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখা নিয়ে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি আইএইএ-এর বোর্ডে ইরানকে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইরান এসব অভিযোগকে “রাজনৈতিক ও ভিত্তিহীন” বলে উড়িয়ে দিয়েছে এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছে—বোর্ডে যদি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তবে তারা “উপযুক্ত জবাব দেবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আগেই এই প্রস্তাবের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে আলোচনার টেবিলে আনতে চায়। তবে চুক্তি স্বাক্ষরের আগে বহু চ্যালেঞ্জ ও অবিশ্বাসের দেয়াল ভাঙতে হবে দুই পক্ষকেই।
