বিজ্ঞাপন
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রবিবার সকালে মণিপুরের পাঁচটি জেলার মোবাইল ডেটা ও ইন্টারনেট সেবা পাঁচদিনের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানী ইম্ফালের কোয়াকেইথেল এলাকা থেকে নিরাপত্তা বাহিনী ওই নেতাকে গ্রেপ্তার করে। এর পরপরই বিক্ষুব্ধ মেইত জনগণ রাস্তায় নেমে আসে। ইম্ফালসহ বিভিন্ন এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে তারা। কোয়াকেইথেল এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে একাধিক ব্যক্তি আহত হন।
সাম্প্রতিক এই উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ইম্ফাল পূর্ব ও পশ্চিম, কাকচিং, থোবাল এবং বিষ্ণপুর জেলায় রবিবার সকাল থেকে মোবাইল ইন্টারনেট ও ডেটা সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রশাসনের ভাষ্য, "সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও গুজব ছড়ানো রোধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।"
মণিপুরে ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা নতুন নয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাজ্যজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর দীর্ঘ আট মাস ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। এবার ফের একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় জনমনে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বহুদিন ধরেই রাজ্যটিতে মেইত এবং কুকি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলমান। এর কেন্দ্রে রয়েছে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে মণিপুর হাইকোর্টের একটি রায়। সেই রায়ে মেইত জাতিকে তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে কুকি ও অন্যান্য পাহাড়ি উপজাতির মধ্যে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়—মেইতরা এবার তাদের সংরক্ষিত জমি ও কোটা সুবিধা দখল করে নেবে।
এর পর থেকেই রাজ্যে ধীরে ধীরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, যা এখনো থামেনি। মাঝে মাঝে পরিস্থিতি শান্ত হলেও সম্প্রতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুরের বাতাস।
এ পরিস্থিতিতে প্রশাসনের ভূমিকা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, একের পর এক ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা নাগরিক অধিকার হরণের শামিল।
মণিপুরের মতো সংবেদনশীল রাজ্যে জাতিগত সম্প্রীতি রক্ষায় প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সমাধান এবং বিশ্বাসযোগ্য প্রশাসনিক পদক্ষেপ। নইলে এমন বিক্ষোভ ও সহিংসতা বারবার ফিরে আসবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
