ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। কাশ্মির ইস্যুকে ঘিরে সাম্প্রতিক পাল্টাপাল্টি সামরিক অভিযান এবং কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে উঠেছে। এই জটিল সময়ে সংঘাত বন্ধে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭।
সূত্র অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে ইসলামাবাদে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তিনি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে “গঠনমূলক সংলাপ” শুরু করতে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন। তার মতে, চলমান উত্তেজনা কমিয়ে ভবিষ্যতের সংঘাত এড়াতে সরাসরি আলোচনার কোনো বিকল্প নেই।
এদিকে, জি-৭ জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও এক যৌথ বিবৃতিতে ভারত ও পাকিস্তানকে অবিলম্বে উত্তেজনা প্রশমন ও সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান। তারা সতর্ক করে বলেন, “আরও সামরিক উত্তেজনা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি হতে পারে।”
উল্লেখযোগ্য যে, ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। অধিকাংশ নিহতই হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুরুষ। এই ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানকে দোষারোপ করে এবং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল, সিন্ধু পানি চুক্তি পর্যালোচনা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করে।
এর জবাবে পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ কয়েকটি পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চূড়ায় পৌঁছে যায় যখন ভারত “অপারেশন সিঁদুর” নামে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরে সীমিত সামরিক অভিযান চালায়। এর পাল্টা জবাবে পাকিস্তান শুরু করে “অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস”, যার আওতায় গত শুক্রবার রাতে ভারতের অন্তত ১১টি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনার পেছনে কাশ্মির ইস্যু, ধর্মীয় পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতি এবং পারমাণবিক প্রতিযোগিতা বড় ভূমিকা রাখছে। এখন যখন উভয় পক্ষই সামরিক পদক্ষেপে লিপ্ত, তখন আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যস্থতা সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও জি-৭-এর সক্রিয় হস্তক্ষেপ পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত করতে পারে, তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক সংলাপ অপরিহার্য।
