ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরের পথে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা না আসে, তা নিশ্চিত করতে জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান। বৈঠকে এলডিসি উত্তরণ কমিটির সদস্যরা অংশ নেন এবং উত্তরণ-সংক্রান্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এটা পুরোটাই সমন্বয়ের ব্যাপার। আমাদের ইতোমধ্যে উন্নয়ন সহযোগী ও বিনিয়োগকারীদের সমর্থন মিলেছে। এখন সময় এসেছে দ্রুত ও সুনির্দিষ্টভাবে এগিয়ে যাওয়ার।”
তিনি উল্লেখ করেন, উত্তরণ কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নের জন্য একটি দক্ষ ও দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল দল গঠন প্রয়োজন, যারা সংকটকালে ‘অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর মতো’ কাজ করবে এবং সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকবে।
এলডিসি থেকে উত্তরণ প্রক্রিয়ায় সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের মনোযোগ নিশ্চিত করতে তিনি বলেন, “এই প্রক্রিয়ার প্রতিটি পর্যায় আমি ব্যক্তিগতভাবে পর্যবেক্ষণ করব এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সরাসরি তত্ত্বাবধান করবে।”
বৈঠকে এলডিসি উত্তরণ কমিটি পাঁচটি অগ্রাধিকার ভিত্তিক পদক্ষেপ চিহ্নিত করেছে, যেগুলো জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানানো হয়:
১. সব সংশ্লিষ্ট সংস্থার অংশগ্রহণে ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ এর পূর্ণ কার্যকরকরণ।
২. সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে ‘জাতীয় শুল্ক নীতি ২০২৩’ বাস্তবায়ন।
৩. ‘জাতীয় লজিস্টিকস নীতি ২০২৪’ এর আওতায় অবকাঠামো প্রকল্পসহ মূল কার্যক্রম বাস্তবায়ন।
৪. সাভার ট্যানারি পল্লীতে ইটিপি প্ল্যান্টের প্রস্তুতি সম্পন্ন।
৫. গজারিয়ার সক্রিয় এপিআই (ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট) পার্ক পূর্ণমাত্রায় পরিচালনা।
অধ্যাপক ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, “এসব শুধু প্রশাসনিক রুটিন নয়—এগুলো আমাদের উত্তরণ অভিযাত্রায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে এবং একটি ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির ভিত্তি গড়বে।”
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত ধাপে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি, নীতিগত সমন্বয় ও দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাচ্ছে।
বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
