বিজ্ঞাপন
দেশের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন—জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আজ সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবরে দাখিল করা হয়।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, “তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়ার পথ উন্মুক্ত হলো। তদন্ত সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে খুব শিগগিরই ‘ফরমাল চার্জ’ দাখিল করা হবে, যা বিচার শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।”
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশজুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বহু ছাত্র-জনতার প্রাণহানি ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, স্বাধীন মিডিয়া এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তদন্তে উঠে আসে এই সময়ের বেশ কিছু ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ও নিপীড়নের চিত্র। সেই প্রেক্ষিতেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে।
এর আগেও গত সপ্তাহে চিফ প্রসিকিউটর ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, চানখারপুল হত্যাকাণ্ডের দায়ে কিছু সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তার ভাষায়, “চলতি সপ্তাহেই এ বিষয়ে ফরমাল চার্জ দাখিল করা হবে এবং ইনশাআল্লাহ, জুলাই গণহত্যার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই বিচার প্রক্রিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নজিরবিহীন পদক্ষেপ হতে চলেছে। একদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত, অন্যদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেও বিচারিক পদক্ষেপ—এই দুটি দিক একসঙ্গে বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও সাহসিকতার পরিচয় বহন করে।
এই প্রসঙ্গে মানবাধিকারকর্মী ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “এ ধরনের মামলার সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ তদন্ত ও বিচার বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে।”
