ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের ঐতিহাসিক শহর হায়দ্রাবাদে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৭ জন। শুক্রবার ভোররাতে চারমিনারের অদূরে একটি পুরনো ভবনে আগুন লাগলে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন সাত বছরের এক শিশু ও একাধিক নারী। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির বরাতে এই তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে হায়দ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসে আগুন লাগার খবর পৌঁছায়। খবর পেয়ে ১১টি ফায়ার ইঞ্জিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। আগুনে গুরুতর আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভবনে কেন আগুন লাগল, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যায়নি। তবে কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। অগ্নিকাণ্ডে ভবনের একাধিক জুয়েলারি দোকান পুড়ে গেছে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, এসব দোকান বহু পুরনো এবং ভবনটিও শত বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবহার হয়ে আসছিল।
তেলেঙ্গানার ফায়ার সার্ভিস বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, “ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের প্রচুর বেগ পেতে হয়েছে। ভবনের গঠন অনেক পুরনো ও সংকীর্ণ হওয়ায় উদ্ধারকাজ জটিল হয়ে পড়ে।”
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেভান্ত রেড্ডি। তিনি বলেন, “এই মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা শোকাহত। আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, “আমি দোষারোপ করতে চাই না, তবে ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ ও পৌরসভাকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন।”
রাজ্যের মন্ত্রী পুনাম প্রভাকর জানান, দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। অচিরেই রাজ্য সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য প্রকাশ করবে বলেও তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই দুর্ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর হায়দ্রাবাদের ঐতিহ্যবাহী এলাকা চারমিনার সংলগ্ন অঞ্চলে নিরাপত্তা ও অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে নিয়মিত পরিদর্শন ও আধুনিক অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।
