ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
নিহতদের মধ্যে এক সপ্তাহ বয়সী একটি শিশুসহ বহু নারী-শিশু রয়েছে, যা যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যমতে, চলমান অভিযানে এখন পর্যন্ত মোট প্রাণহানির সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৫৩ হাজার ৫০০ জন। অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক—নারী, শিশু ও বয়স্ক। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা গতকাল গাজায় ১১৫টি হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, এসব হামলা হামাসের অবস্থানে চালানো হয়েছে। তবে বাস্তবতা হলো, এসব হামলায় প্রাণ হারানো অধিকাংশই সাধারণ মানুষ।
গাজার জনসংখ্যা কয়েক মাস ধরেই ভয়াবহ খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসেবা সংকটে রয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত সোমবার থেকে সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। কিন্তু গাজাবাসীর জন্য তা মোটেও যথেষ্ট নয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘ডক্টরস উইথআউট বর্ডারস’ বা এমএসএফ-এর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইসরায়েল যা করছে, তা বাস্তব ত্রাণ সহযোগিতা নয়। বরং এটি একটি প্রতারণার চিত্রনাট্য। তারা দেখাতে চায় ত্রাণ ঢুকছে, কিন্তু বাস্তবে সেগুলো সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায় না।”
চলতি বছরের জানুয়ারিতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও, ২ মার্চ সেই চুক্তি ভেঙে ইসরায়েল পুনরায় গাজায় হামলা শুরু করে। এর পর থেকেই বন্ধ ছিল সব ধরনের ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা প্রবেশ। প্রায় আড়াই মাস ধরে মানবিক সহায়তা পুরোপুরি বন্ধ ছিল গাজায়।
সম্প্রতি কিছু ত্রাণ ট্রাক প্রবেশ করলেও তা এখনো সরাসরি সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছায়নি। বিশ্লেষকদের মতে, দখলদার ইসরায়েল এই ত্রাণ প্রবেশকে আন্তর্জাতিক চাপ থেকে বাঁচার কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। শিশুহত্যা, খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহ বন্ধ রাখা এবং বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো আন্তর্জাতিক আইন পরিপন্থী। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দেখা যায়নি।