ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত সর্বশেষ অভিযানটি রীতিমতো ইতিহাস গড়েছে। বুধবার (২১ মে) ভোরে, নারায়ণপুর জেলার আবুঝামাদ এলাকায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মাওবাদী)-র শীর্ষ নেতা বাসভ রাজু সহ অন্তত ২৭ জন মাওবাদী নিহত হয়েছেন। এ অভিযানে জেলা রিজার্ভ গার্ড (DRG)-এর এক সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।
এই সংঘর্ষের পেছনে ছিল সুপরিকল্পিত গোয়েন্দা তৎপরতা। বস্তার রেঞ্জের পুলিশ মহাপরিদর্শক সুন্দররাজ পি জানান, তাদের কাছে তথ্য ছিল যে আবুঝামাদের একটি দুর্গম এলাকায় একজন সিনিয়র মাওবাদী নেতা আশ্রয় নিয়েছেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণপুর, দান্তেওয়াড়া, বিজাপুর এবং কোন্ডাগাঁও জেলার যৌথ নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালায়।
অভিযানটি পরিচালিত হয় ছত্তিশগড় ও তেলেঙ্গানা সীমান্তবর্তী কারেগুট্টালু পাহাড়ের নিকটবর্তী এলাকায়, যা দীর্ঘদিন ধরে মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এখানেই গত মাসে (২১ এপ্রিল) আরেকটি বড় অভিযান চালানো হয়, যেখানে ৩১ জন মাওবাদী নিহত হয়—যাদের মধ্যে মাত্র ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরও ছিল।
অভিযানের পর এক বিবৃতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, "বাসভ রাজুর মৃত্যুর মাধ্যমে নকশালবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। এই প্রথম কোনো সাধারণ সম্পাদক পর্যায়ের শীর্ষ নেতা নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হলেন।"
ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই এই সাহসিক অভিযানের প্রশংসা করে বলেন, "আমরা প্রথম থেকেই তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু তারা লড়াই বেছে নিয়েছে।"
গত এক মাসে এটি ছিল দ্বিতীয় বড় মাওবাদী বিরোধী অভিযান, যা নিরাপত্তা বাহিনীর দৃঢ়তা এবং গোয়েন্দা দক্ষতারই প্রতিফলন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ড মাওবাদী আন্দোলনের কাঠামোয় বড় ধরনের ধাক্কা দিতে পারে।
