ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে খনির লিফট ভেঙে যাওয়ার পর শ্রমিকরা প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে ভূগর্ভে আটকে ছিলেন। শুক্রবার (২৩ মে) দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে তাদের সবাইকে নিরাপদে মাটির ওপরে আনা হয়।
খনির মালিক প্রতিষ্ঠানটি জানায়, দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে প্রথম দফায় ৭৯ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়। এরপর টানা ছয় ঘণ্টার অভিযানে বাকি ১৮১ জনকেও জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলে জানানো হয়। কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়, শ্রমিকরা চাইলে খনির জরুরি বহির্গমন পথ ব্যবহার করতে পারতেন, তবে সেটি দীর্ঘ এবং শ্রমসাধ্য হওয়ায় তারা অস্থায়ী নিরাপদ কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছিলেন।
খনি দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা উৎকণ্ঠার মধ্যে অপেক্ষা করেন তারা। খনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সব শ্রমিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় খনি শ্রমিক ইউনিয়ন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে শ্রমিকরা আটকে পড়েন। এরপর ২০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় ইউনিয়নটি। তবে খনি পরিচালনাকারী কোম্পানির দাবি ছিল, শ্রমিকরা কোনও সময়ই সরাসরি ঝুঁকিতে ছিলেন না, কারণ তারা খনির নিরাপদ এলাকায় অবস্থান করছিলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় খনিশিল্প বহু মানুষের জীবিকার অন্যতম প্রধান উৎস। দেশটি প্লাটিনাম, সোনা এবং অন্যান্য খনিজ সম্পদ রপ্তানিতে বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে আছে। তবে খনিগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনা চলছে। ২০২৩ সালে দেশটিতে খনি দুর্ঘটনায় ৫৫ জন এবং ২০২৪ সালে আরও ৪২ জন শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে।
এই সাম্প্রতিক ঘটনা ফের প্রমাণ করলো, নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি কীভাবে বড় ধরনের দুর্ঘটনায় রূপ নিতে পারে। ভাগ্যক্রমে এইবার প্রাণহানি হয়নি, তবে এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি সতর্ক সংকেত হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।