ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লার নবাব ফয়জুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই যোদ্ধাদের সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে আমার এক সাংবাদিকের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। বিএনপির কেন জানি মনে হচ্ছে আমরা তাদের পক্ষে লিখছি না। আমার সহকর্মীর ওপর যে আঘাত হয়েছে, আমি মনে করি সে আঘাত আমাকে করা হয়েছে। আমার সহকর্মীর ওপর আঘাত আর আমার ওপর আঘাতের কোনো পার্থক্য আমি দেখি না।”
মাহমুদুর রহমান বলেন, আমার পত্রিকার এডিটোরিয়াল নীতি স্পষ্ট— ফ্যাসিবাদ ও অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে লেখা। কিন্তু বর্তমানে যাদের সম্পর্কে তাদের প্রতিবেদনে সমালোচনা করা প্রয়োজন, তারা সবাই ‘জুলাই যোদ্ধা’—বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। “এই যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যখন আমি লিখব, তখন পেশাদারিত্বের সঙ্গে লিখতে গেলে তাদের কারও না কারও সমালোচনা তো করতে হবে। কারণ সবাই তো আর সঠিক কাজ করে না। আমি নিজেও তো সঠিক কাজ করি না। সংবাদপত্রের কাজটা এমনই, লিখতে হয়। লিখতে গিয়ে আমরা অনেক শত্রু বানিয়েছি,” তিনি বলেন।
মাহমুদুর আরও অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে কুষ্টিয়ায় তাকে যেভাবে রক্তাক্ত করা হয়েছিল এবং গতকালের ঘটনাটি—দুইটোর মধ্যে কোনো মৌলিক পার্থক্য নেই। “দুইটা ঘটনা একই। তাহলে আমরা এত বড় বিপ্লব থেকে কী শিখতে পেলাম?” তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন।
রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি অনুরোধ করেন যে, সমালোচনাকে গ্রহণ করতে শিখতে হবে। “সমালোচনাকে মানতে হবে আপনাকে। তার সঙ্গে আমাদের দায়িত্ব পেশাদারিত্ব বজায় রাখা। কিন্তু আপনাদের সমালোচনা মানতে হবে। সমালোচনার বদলে আপনারা সাংবাদিককে আহত করবেন, সাংবাদিকদের গায়ে হাত তুলবেন, এটা চলবে না,” বলেন মাহমুদুর রহমান। তিনি যোগ করেন, নিজের শক্তি ও পত্রিকার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাবেন বলে তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
এদিন ওই অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টে শহীদ ও আহতদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানটি ‘আমার দেশ পাঠক ফোরাম’ আয়োজিত ছিল। কুমিল্লা প্রতিনিধি এম হাসান সঞ্চালনা করেন এবং সভাপতিত্ব করেন আমার দেশ পাঠক ফোরামের সভাপতি ডাঃ আরিফ মোর্শেদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলী, জামায়াতে ইসলামীর কুমিল্লা মহানগরীর আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, এবি পার্টি, হেফাজত ইসলাম ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
মাহমুদুর রহমান সকলকে সতর্ক করে বলেন, পত্রিকা কোনো দলের পক্ষে নয়; “দৈনিক আমার দেশ বাংলাদেশের পক্ষে, কোনো দলের পক্ষে নয়। এটা যদি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বুঝতে পারতেন তাহলে আমাদের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যেত।”
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় এত বড় বিপ্লবের পরও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এই বিষয়টি অনুধাবন করতে পারেননি।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...