ভোরের বাণী
ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
আজ বুধবার (২৮ মে) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
এর একদিন আগেই, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক যুগান্তকারী রায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডসহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বাতিল করে তাকে সব অভিযোগ থেকে খালাস দেয়। ২০১৪ সালে ঘোষিত সেই রায়ে গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ ও নির্যাতনের ছয়টি ঘটনায় আজহারুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
গতকাল মঙ্গলবার, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে রায়টি বাতিল করে দেয়। বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো ব্যক্তি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রিভিউ আবেদনের প্রেক্ষিতে খালাস পেলেন। এই রায়কে অনেকে আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত বলেও অভিহিত করছেন।
আজহারুল ইসলাম ২০১২ সালের ২২ আগস্ট রাজধানীর মগবাজারের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন। এরপর দীর্ঘ ১৩ বছর বিচার প্রক্রিয়া ও বন্দিজীবন পেরিয়ে শেষপর্যন্ত মুক্তি পেলেন তিনি। প্রথমবার ২০১৯ সালে আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছিল। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে সরকারের পরিবর্তনের পর আজহারুল দ্বিতীয় দফা আপিল করেন, যার ফলস্বরূপ আসে এই খালাসের রায়।
রায় ঘোষণার পরপরই গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট থেকে স্বাক্ষরিত সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশ করা হয় এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যথাযথ বিধি অনুযায়ী তার মুক্তির আদেশ দেয়।
এই রায়কে কেন্দ্র করে আইনি অঙ্গন ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এমন একটি মামলায় দীর্ঘদিন পর রায় উল্টে দেওয়ার পেছনে বিচারিক প্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছ ছিল—তা নিয়ে আরও বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীর সহযোগিতায় যুদ্ধাপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে বহু জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে বিচার শুরু করে বাংলাদেশ সরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর আজহারুলসহ অনেক নেতাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তবে আজহারুলের মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের এ ধরনের রায় নজির সৃষ্টি করল।