Logo Logo

দুই শিক্ষার্থীকে নির্যাতন ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ববি ছাত্রদলের বিরুদ্ধে


Splash Image

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শেরেবাংলা হলের দুই আবাসিক শিক্ষার্থীকে হলরুম থেকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে গিয়ে শারীরিক হেনস্তা, মানসিক নির্যাতন এবং হত্যার হুমকি দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।


বিজ্ঞাপন


ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এস. এম. ওয়াহিদুর রহমান (আইন বিভাগ) ও ফয়সাল বাদশা (উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ) সোমবার (১৫ নভেম্বর) পৃথকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর এবং হল প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, ঘটনার সময়টি ছিল ১২ ডিসেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ১টা থেকে ১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে।

এস. এম. ওয়াহিদুর রহমানের অভিযোগে বলা হয়েছে, তাকে হলের মূল ফটকের সামনে নবনির্বাচিত ছাত্রদল সভাপতি মো. মোশাররফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, আহসান উল্লাহ, আকিবুর রহমান, সোহানুর রহমান সিফাত, রবিন মিয়া ও আরও কিছু অজ্ঞাতনামা নেতা–কর্মী ঘিরে ধরেন। তার দেহ তল্লাশি করা হয় এবং হলে বৈধভাবে থাকার বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। পূর্বের একটি ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে রবিন মিয়া তাকে হত্যার হুমকি দেন এবং “ভবিষ্যতে বাঁচতে দেওয়া হবে না” বলে ভয় দেখান। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় এবং মানসিকভাবে হেয় করা হয়।

ফয়সাল বাদশার অভিযোগে বলা হয়েছে, একই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে উচ্চশব্দে কনসার্টের প্রতিবাদ করার পর রাতে তার রুমের বাইরে থেকে জোরপূর্বক তাকে তুলে নেওয়া হয়। তাকে শীতের মধ্যে লুঙ্গি ছাড়া অন্য কোনো পোশাক ছাড়াই টেনে-হিঁচড়ে হলের নিচে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় এক ঘণ্টা তাকে বেঞ্চ ও গেস্টরুমে বসিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, তাকে ‘অবৈধ শিক্ষার্থী’ ও ‘শিবির সংশ্লিষ্টতার’ অভিযোগ দিয়ে ক্ষমা চাওয়ানো হয় এবং খালি গায়ের ভিডিও ধারণের মাধ্যমে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়।

ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, চারুকলা সংসদ আয়োজিত ‘মাঘমল্লার’ অনুষ্ঠানে গভীর রাত পর্যন্ত শব্দদূষণ নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের দায় তাদের ওপর চাপানো হয় এবং ভবিষ্যতে ছাত্রদলের নির্দেশ না মানলে “চরম পরিণতি” ভোগ করতে হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়। ঘটনার পর তারা চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং হলে স্বাভাবিকভাবে বসবাস ও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ায় শঙ্কিত। তারা দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতাকর্মী সোহানুর রহমান সিফাত ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, “এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। হল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, কিন্তু তারা এখনো আমাদের কিছু জানাননি।”

অপর অভিযুক্ত সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, “এ বিষয়ে আমি প্রথম তোমার কাছেই শুনলাম। আমরা সেখানে ছিলাম না, তবে ছাত্রদলের অন্য কেউ ছিল কিনা জানি না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. ফয়সাল রাহাত হোসেন বলেন, “আমি বিষয়টি শুনেছি। ঘটনার সত্যতা পেলে প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।”

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...