Logo Logo
বিশ্ব

ভারতসহ বিভিন্ন বাড়ছে দেশে বাড়ছে করোনার প্রকোপ


Splash Image

পাঁচ বছর আগে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো কোভিড-১৯ আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। চলতি বছরের মে মাসের শেষদিক থেকে ভারতে হঠাৎ করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। গত এক সপ্তাহে দেশটিতে করোনায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১২০০ শতাংশের বেশি।


বিজ্ঞাপন


ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৩১ মে পর্যন্ত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৩৯৫। অথচ মে মাসের শুরুতে এই সংখ্যা ছিল মাত্র কয়েকশ’।

ভারতের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, চীন, থাইল্যান্ড, হংকং এবং অস্ট্রেলিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশেও নতুন করে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৃদ্ধির পেছনে অন্যতম কারণ হলো ওমিক্রনের নতুন সাবভেরিয়েন্ট NB.1.8.1, যা অধিক সংক্রমণযোগ্য এবং কোষে সহজে প্রবেশ করতে সক্ষম।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) প্রধান ড. রাজীব বেহেল জানিয়েছেন, বর্তমানে ভারতের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে সংক্রমণের হার বেশি। এর মধ্যে কেরালা, মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ৩১ মে কেরালায় নতুন করে ১৮৯ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া দিল্লিতে ৩৭৫ এবং মহারাষ্ট্রে ৪৬৭ জন সক্রিয় রোগী শনাক্ত হয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন ভেরিয়েন্টের উপসর্গ এখন পর্যন্ত তুলনামূলকভাবে মৃদু। সাধারণত গলা ব্যথা, জ্বর, পেশী ব্যথা, কাশি এবং হালকা গ্যাস্ট্রো-সিম্পটমস দেখা যাচ্ছে। মৃত্যুহারও এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ভারতে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, NB.1.8.1 ভেরিয়েন্টটি একটি ‘রিকম্বিন্যান্ট’ স্ট্রেইন, অর্থাৎ এটি পূর্ববর্তী একাধিক ভেরিয়েন্টের সংমিশ্রণে তৈরি। এপ্রিলের শেষে জমা দেওয়া বৈশ্বিক জিনোম সিকোয়েন্সিং রিপোর্টে দেখা গেছে, প্রায় ১০.৭% নমুনাতেই এই ভেরিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, যেখানে মার্চে তা ছিল মাত্র ২.৫%। এতে বোঝা যায় যে এটি দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশেও করোনার সংক্রমণ কিছুটা বাড়ছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষত জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক ব্যবহার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের জনসমাগম এড়িয়ে চলার অনুরোধ করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে সতর্কতা ও প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি। নতুন এই ভেরিয়েন্ট এখনও টিকার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধী নয়, তবে এটি পূর্ববর্তী সংক্রমণ বা টিকার মাধ্যমে গঠিত রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা এড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচির আওতায় ইতোমধ্যে ভারতে ৭২ কোটি মানুষকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী, যাদের টিকা নেওয়া হয়নি বা বুস্টার ডোজ বাকি রয়েছে, তাদের দ্রুত টিকা গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা