Logo Logo
বিশ্ব

বন্ধুত্ব থেকে বৈরিতা : ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্বে কাঁপছে যুক্তরাষ্ট্র


Splash Image

গ্রাফিক্স : ভোরের বাণী।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এক নজিরবিহীন নাটকীয় মোড়—প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রযুক্তি-উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মধ্যে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে চরম বিরোধের মধ্য দিয়ে।


বিজ্ঞাপন


একসময় হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরে রাত কাটানো মাস্ক এখন ট্রাম্পের কড়া সমালোচক। আর ট্রাম্পের ভাষায়, মাস্ক 'বিশ্বাসঘাতক'।

সম্প্রতি ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ নিয়ে মাস্কের তীব্র সমালোচনার পর ট্রাম্প পাল্টা হুমকি দেন, মাস্কের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সব ধরনের চুক্তি পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। হোয়াইট হাউস থেকে সম্প্রচারিত এক বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি ইলনের ওপর খুব হতাশ। আমি তাকে সহায়তা করেছি, কিন্তু সে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।”

এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় টানটান বাকযুদ্ধ। মাস্ক অভিযোগ তোলেন, কুখ্যাত ধনকুবের জেফরি অ্যাপস্টেইনের গোপন নথিতে ট্রাম্পের নাম রয়েছে, যদিও তিনি কোনো প্রমাণ হাজির করেননি। পাল্টা ট্রাম্প বলেন, “তিনি (মাস্ক) পাগল হয়ে গেছেন।”

রাজনৈতিক ভূকম্প ও অর্থনৈতিক ক্ষয়

মাস্কের এই অভিযোগ এবং ট্রাম্পের পাল্টা মন্তব্যের পরপরই রাজনীতিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক আলোড়ন। মাস্কের মালিকানাধীন টেসলা কোম্পানির শেয়ারের দর একদিনেই ১০০ বিলিয়ন ডলার হ্রাস পায়। একই সঙ্গে তিনি ঘোষণা দেন, স্পেসএক্স যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাকাশ কর্মসূচি থেকে সরে আসবে।

ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেন, “আমাদের বাজেট বাঁচানোর সহজ উপায় হচ্ছে—ইলনের প্রাপ্ত ভর্তুকি ও সরকারি চুক্তিগুলো বাতিল করে দেওয়া।” এর উত্তরে মাস্ক এক ধাপ এগিয়ে জানান, “স্পেসএক্সের ‘ড্রাগন’ মহাকাশযান ধ্বংস করে দিতে প্রস্তুত।”

এই বিতর্কের জের ধরে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, “মাস্কের প্রতিক্রিয়া হতাশাজনক।” তার মতে, মাস্ক ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এ নিজের পছন্দের নীতিগুলো বাদ পড়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

সম্পর্কের পতনের পেছনে কী?

প্রসঙ্গত, মাস্ক ছিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের ‘সরকারি ব্যয় দক্ষতা দপ্তর’ (ডগে)-এর প্রধান। মাত্র চার মাস আগে যোগ দিয়েছিলেন এবং হোয়াইট হাউসের এক অভ্যর্থনায় তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অথচ এত দ্রুত, এত বিস্ফোরকভাবে সম্পর্কের অবনতি ওয়াশিংটন অঙ্গনে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে।

মাস্ক জানান, প্রশাসনের ধীরগতি ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে মতবিরোধের কারণেই তিনি পদত্যাগ করেছেন। পরে ‘এক্স’-এ এক জরিপ চালিয়ে তিনি প্রশ্ন করেন: “আমি কি একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করব?”—যা অনেকেই রাজনৈতিক হুমকি হিসেবেই দেখছেন।

সামনের দিনগুলোতে কী ঘটতে পারে?

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ স্টিভ ব্যানন ইতোমধ্যেই দাবি করেছেন, “মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা উচিত।” একদিকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি, অন্যদিকে সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রনেতা—তাদের দ্বন্দ্ব কতদূর গড়াবে, সেটাই এখন নজরে রেখেছে পুরো রাজনৈতিক মহল।

আরও পড়ুন

ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা