ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সকল রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্র বিনির্মাণের রূপরেখা প্রণয়নের অভূতপূর্ব প্রয়াস শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে একটি জাতীয় সনদ প্রস্তুতের কাজ চলছে, যা দেশের প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষায় ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
আজ (১০ মে) সকালে রাজধানীর সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি। কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বৈঠকে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “নাগরিকদের অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত না করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়। জাতীয় সনদে সকল দলের মতামতের ভিত্তিতে নাগরিক অধিকার, আইনের শাসন ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার প্রতিফলন থাকবে।”
আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
তিনি বলেন, বহু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই মুহূর্তকে সফল করার জন্য সকল পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রস্তাবনাগুলো একটি সহমতের পথ তৈরি করতে সাহায্য করছে।
ইউপিডিএফ প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দেন ঢাকা অঞ্চলের সংগঠক মাইকেল চাকমা। সঙ্গে ছিলেন দলের সদস্য সুনয়ন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি জিকো ত্রিপুরা ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অমল ত্রিপুরা।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত ইউপিডিএফসহ মোট ২৮টি রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছে। এই আলোচনাগুলোর লক্ষ্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলা।
এই উদ্যোগকে অনেকেই ১৯৭২ সালের সংবিধান রচনার পর রাষ্ট্রীয় গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছেন। একটি কার্যকর জাতীয় সনদ কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার সেতুবন্ধনই তৈরি করবে না, বরং এটি নাগরিকের মানবাধিকার, ন্যায্যতা ও মর্যাদার স্থায়ী ভিত্তি স্থাপন করবে।
