ছবি- সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
হালাল অর্থনীতির বিশাল বৈশ্বিক বাজারে অংশ নিতে সহায়ক নীতিমালা, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ করছে সরকার।
রোববার (৩ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘হালাল ইকোনমি ৩৬০: ড্রাইভিং গ্লোবাল গ্রোথ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই) এই আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, “বিশ্বজুড়ে অধিকাংশ হালাল পণ্য অমুসলিম দেশগুলো উৎপাদন করছে। এটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের জন্য যেমন চিন্তার বিষয়, তেমনি আমাদের জন্য এটি বড় একটি সুযোগও। বাংলাদেশ যথাযথ পরিকল্পনা ও উদ্যোগে এ খাতে নেতৃত্ব দিতে পারে।”
তিনি জানান, বিনিয়োগ আকর্ষণ ও হালাল পণ্য উৎপাদনের অবকাঠামো উন্নয়নে সরকার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে টেকসই হালাল অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বিএমসিসিআই সভাপতি সাব্বির এ খান বলেন, “হালাল অর্থনীতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি বড় চালিকাশক্তি। বৈশ্বিক হালাল খাদ্যবাজারের আকার ২০২৫ সালে ৩.৩০ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে এবং ২০৩৪ সালের মধ্যে তা ৯.৪৫ ট্রিলিয়নে উন্নীত হবে। এই সময়কালে বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধির হার হবে প্রায় ১২.৪২ শতাংশ।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ শুধু তৈরি পোশাক খাতে নয়, হালাল পণ্য রপ্তানিতেও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা, সহজতর সনদপ্রক্রিয়া ও অনুকূল পরিবেশ থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে শুধুমাত্র মালয়েশিয়াতেই ৭-৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের হালাল পণ্য রপ্তানি সম্ভব।”
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মোহাম্মদ শুহাদা ওসমান। তিনি বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃঢ়তা তুলে ধরে বলেন, “হালাল অর্থনীতি গঠনে মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে, যা উভয় দেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে।”
অনুষ্ঠানে উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্কুলের উপদেষ্টা সৈয়দ আলমগীর একটি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন এবং আইইউবিএটি-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. মোমিনুল ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি হালাল অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা, সম্ভাব্য উন্নয়ন কৌশল এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে বিশ্লেষণমূলক আলোচনা করেন।
প্যানেল আলোচনায় বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন এবং একটি উন্মুক্ত আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে হালাল অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বিশ্বের ক্রমবর্ধমান হালাল বাজারে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকেই ত্বরান্বিত করবে না, বরং মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করতে পারে।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...