বিজ্ঞাপন
সোমবার (১১ আগস্ট) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় আর্কাইভস মিলনায়তনে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের মূল্যায়ন, সংস্কার, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা’ বিষয়ক জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। বিআইজিডি ও সংস্কারভিত্তিক নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘ভয়েস ফর রিফর্ম’ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জরিপে দেখা গেছে, ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ উত্তরদাতা কাকে ভোট দেবেন তা জানাতে চাননি এবং ১ দশমিক ৭০ শতাংশ জানিয়েছেন তাঁরা ভোট দেবেন না।
আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে ভোট দেবেন বলেছেন ১২ শতাংশ, জামায়াতে ইসলামীকে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ২ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত অক্টোবরে বিএনপির সমর্থন ছিল ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ, জামায়াতের ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং এনসিপির ২ শতাংশ। অর্থাৎ বিএনপি ও জামায়াতের ভোট কিছুটা কমেছে, এনসিপির সামান্য বেড়েছে।
গত অক্টোবরে আওয়ামী লীগকে (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ভোট দেওয়ার কথা বলেছিলেন ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ মানুষ, যা কমে এখন ৭ দশমিক ৩০ শতাংশে নেমেছে। জাতীয় পার্টির সমর্থন ০ দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে কমে ০ দশমিক ৩০ শতাংশে এবং অন্যান্য ইসলামি দলের সমর্থন ২ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে নেমে ০ দশমিক ৭০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় কোন দলের প্রার্থী জিতবে—এই প্রশ্নে ৩৮ শতাংশ উত্তরদাতা বিএনপির, ১৩ শতাংশ জামায়াতের, ১ শতাংশ এনসিপির এবং ৭ শতাংশ আওয়ামী লীগের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা দেখেছেন।
বিআইজিডির ফেলো অব প্র্যাকটিস সৈয়দা সেলিনা আজিজ জানান, গ্রাম ও শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৫ হাজার ৪৮৯ জন মানুষের মতামত নিয়ে জরিপটি করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ, ৪৭ শতাংশ নারী; ৭৩ শতাংশ গ্রামের এবং ২৭ শতাংশ শহরের বাসিন্দা। টেলিফোনের মাধ্যমে ১ থেকে ২০ জুলাই জরিপ চালানো হয়।
রাজনৈতিকভাবে দেশ সঠিক পথে এগোচ্ছে মনে করেন ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা, আর ৪৫ শতাংশ মনে করেন অর্থনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে। গত অক্টোবরে রাজনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছেন মনে করেছিলেন ৫৬ শতাংশ, অর্থনৈতিকভাবে ৪৩ শতাংশ। অর্থাৎ অর্থনৈতিক আস্থায় সামান্য উন্নতি হলেও রাজনৈতিক আস্থা কমেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমকে ১০০-এর মধ্যে গড়ে ৬৩ নম্বর দিয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা। গত অক্টোবরে এ স্কোর ছিল ৬৮।
ভালোভাবে সংস্কার করে তারপর নির্বাচন চান ৫১ শতাংশ, কিছু জরুরি সংস্কার শেষে নির্বাচন চান ১৭ শতাংশ, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন চান ১৪ শতাংশ এবং ১৩ শতাংশ সংস্কার সম্পর্কে কোনো ধারণা দেননি।
প্রয়োজনীয় সংস্কারের মধ্যে ৩০ শতাংশ বলেছেন আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন, ১৬ শতাংশ আইন ও বিচারব্যবস্থার উন্নয়ন, ১১ শতাংশ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ১৬ শতাংশ অর্থনীতি বা ব্যবসা চাঙা করা, ১৩ শতাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো, ১০ শতাংশ বেকারত্ব কমানো এবং ১৭ শতাংশ দুর্নীতি দমন। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অসহনশীলতা কমানো এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন ১৯ শতাংশ করে মানুষ।
আগামী ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন চান ৩২ শতাংশ, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে চান ১২ শতাংশ, জুনের মধ্যে চান ১১ শতাংশ এবং ডিসেম্বর ২০২৬ বা পরে চান ২৫ শতাংশ।
৭০ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। ১৫ শতাংশ মনে করেন হবে না এবং ১৪ শতাংশ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিআইজিডির জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো মির্জা এম হাসান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান। সঞ্চালনা করেন ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-আহ্বায়ক এ কে এম ফাহিম মাশরুর। আলোচনার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তাঁরা।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...