Logo Logo

সাতক্ষীরায় কথিত সাংবাদিক আলামিন সরদারের চাঁদাবাজিতে বিপাকে সর্বসাধারণ


Splash Image

কথিত সাংবাদিক আলামিন সরদার।

সাতক্ষীরায় কথিত সাংবাদিক আলামিন সরদারের চাঁদাবাজিতে জর্জরিত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা। তার অপকর্মের রোশানাল থেকে রেহাই পাননি পেশাদার সাংবাদিকরাও।


বিজ্ঞাপন


তালা উপজেলার কাশিয়াডাঙা গ্রামের তুব্বাত সরদারের ছেলে আলামিন সরদার অল্প বয়সেই নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি কেবল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এর পর চুরি, ডাকাতি, মাদক বিক্রিসহ একাধিক অপরাধে জড়িত থেকে কয়েক দফায় জেল খেটেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, জেলার শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে এবং ভুয়া সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন আলামিন ও তার সিন্ডিকেট। কর্মকর্তাদের নাম ও ফোন নম্বর ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করে তিনি প্রথমে পরিচিত হন, পরে আর্থিক দাবি তোলেন। দাবি মতো টাকা না দিলে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ তৈরি করে ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এরপর হোয়াটসঅ্যাপে সেই সংবাদ পাঠিয়ে আবারও মোটা অংকের টাকা দাবি করেন।

কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সামাজিক অবস্থান ও মানসম্মান নষ্ট হওয়ার ভয়ে অনেকে বাধ্য হয়ে টাকা দিয়েছেন। কিন্তু কিছুদিন পরই ফের নতুন করে অর্থ দাবির মুখে পড়তে হয়েছে তাদের।

তালা উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল জলিল ও আশরাফুল হক অভিযোগ করে বলেন, “আলামিন তার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার কথা বলে টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় আমাদের ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজ বানিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে এবং ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করে।” তারা এই চাঁদাবাজির হাত থেকে মুক্তির জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

পাটকেলঘাটার ব্যবসায়ী কেশব সাধু ও আবু সাইদ জানান, প্রথমে আর্থিক অনটনের কথা বলে টাকা চান আলামিন। পরে দুর্নীতির অভিযোগের ভুয়া সংবাদ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বড় অংকের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার হুমকি দেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আলামিন নিয়মিত মাদক সেবন করেন। মাদকের অর্থ যোগান দিতেই একটি ভূয়া অনলাইন পোর্টাল খুলে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন। সাংবাদিকতার নামে জেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাদের জিম্মি করে নিয়মিত অর্থ আদায় করছেন তিনি।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিনুল হক বলেন, “আলামিনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। পর্নোগ্রাফি নিয়েও একটি মামলা আছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়রা মনে করছেন, দ্রুত প্রশাসন যদি এই কথিত সাংবাদিক সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে না ধরে তবে জেলার সাংবাদিকতার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রতিবেদক- মোকাররম বিল্লাহ, সাতক্ষীরা।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...