ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সরকার আমাদের সাত দফা দাবি মেনে না নিলে আমরা প্রান্তিক খামারিরা খামার বন্ধ রাখতে বাধ্য হবো এবং ডিম-মুরগির উৎপাদন স্থগিত করা হবে। সরকার যতদিন আমাদের দাবি মেনে না নিবে, ততদিন আমাদের অবরোধ চলবে।”
সংবাদ সম্মেলনে বিপিএর নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সুমন হাওলাদার বলেন, “ডিম ও মুরগির ৮০ শতাংশ উৎপাদন করে আমাদের প্রান্তিক খামারিরা। কিন্তু, এই খাতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। গুটিকয়েক কোম্পানির সিদ্ধান্তে প্রান্তিক খামারিদের ওপর বোঝা চাপানো হয়। এর ফলে বিগত কয়েক বছরে হাজার হাজার প্রান্তিক খামারি ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।”
তিনি আরও জানান, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে একটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা এবং মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৮০–৯০ টাকায়, কিন্তু বাংলাদেশে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা এবং মুরগি ১৫০–১৬৫ টাকায়। “আমরা কেন অল্প দামে ডিম-মুরগি বিক্রি করতে পারছি না? এর পেছনে রয়েছে কিছু কোম্পানির স্বার্থসংক্রান্ত বিষয় এবং সরকারের নজরদারির অভাব,” বললেন তিনি।
বিপিএর সভাপতি উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালে ট্রেড অ্যান্ড ট্র্যারিফ কমিশনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে প্রতি কেজি ফিডের দাম ১৫–২০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে একটি বিক্রয়যোগ্য পল্টি মুরগির উৎপাদন খরচ ১৫০–১৬৫ টাকা পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে। কিন্তু প্রান্তিক খামারিদের লোকসান করে মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে ১৩০–১৪০ টাকায়।
সংগঠনটি জানাচ্ছে, যখন ডিম বা মুরগির দাম বৃদ্ধি পায়, তখন সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ দেখা যায়। কিন্তু ফিড বা মুরগির বাচ্চার দাম বাড়লে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। “যতদিন পর্যন্ত সরকার এই সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারবে, ততদিন বাজারে স্বস্তি ফিরে আসবে না,” বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার লিখিত সাত দফা দাবি তুলে ধরেন, যা হলো:
১. কর্পোরেট সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে ফিড, মুরগির বাচ্চা, মেডিসিন/ভ্যাকসিনের দাম সরকার নির্ধারণ করবে।
২. অবিলম্বে কর্পোরেট প্রবাবমুক্ত, ন্যায্য ও স্বচ্ছ বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
৩. প্রান্তিক খামারিদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের নীতিনির্ধারনী পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৪. ফিড, বাচ্চা ও ওষুধের বাজারে নিয়মিত অডিট ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৫. উৎপাদন খরচ অনুযায়ী ১০ শতাংশ লাভ যুক্ত করে ডিম ও মুরগির ন্যায্য দাম নির্ধারণ করতে হবে।
৬. ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনা, সহজ শর্তে জামানতবিহীন ঋণ ও ভর্তুকি দিতে হবে।
৭. দুর্নীতিগ্রস্ত ও কর্পোরেটপন্থি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিপিএর এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের প্রান্তিক খামারিরা আগামী মাস থেকে সম্ভাব্য আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...