Logo Logo
ইসলাম
চুল-নখ না কাটা সুন্নত!

জিলহজ মাসে চুল ও নখ কাটা নিয়ে ইসলামী নির্দেশনা: কী বলছেন আলেমরা?


ভোরের বাণী

Splash Image

ছবি. সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক | ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো হজ এবং কোরবানি। প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। যারা হজে যান না, তাদের জন্যও কোরবানি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।


বিজ্ঞাপন


এই কোরবানির সময়কে ঘিরে মুসলমানদের মধ্যে কিছু নির্দিষ্ট আমল ও আচরণ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো—জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন চুল ও নখ না কাটা। এই বিষয়টি নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তিতে ভোগেন। অনেকে মনে করেন, এই সময়ে চুল ও নখ কাটা হারাম বা নিষিদ্ধ। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, এটি হারাম নয়, বরং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাত হিসেবে পরিচিত একটি উত্তম আমল।

সহিহ মুসলিমে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমাদের কেউ যদি কোরবানি করার ইচ্ছা করে, তবে যেন সে জিলহজ মাস শুরু হওয়ার পর চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে।” এই হাদিসকে ভিত্তি করেই ফেকাহবিদ ও আলেমরা পরামর্শ দেন—যারা কোরবানি করবেন, তাদের জন্য এ সময়ে চুল ও নখ না কাটা উত্তম এবং সওয়াবের কাজ। তবে কেউ যদি এই সময়ে চুল বা নখ কেটে ফেলেন, তাহলে গুনাহ হবে না।

মাজহাবভেদে এ বিষয়ে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। ইমাম মালিক, ইমাম আহমদ ও ইমাম শাফি (রহ.)-এর মতে, কোরবানির নিয়ত থাকলে চুল ও নখ না কাটা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালনীয়। তাদের মতে এটি এমন একটি আমল যা ফরজের কাছাকাছি মর্যাদা পায়। অন্যদিকে, হানাফি মাজহাবের মতে, এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদা, অর্থাৎ পালন করলে সওয়াব, না করলেও গুনাহ নেই। তাই এই আমলটি একটি ব্যক্তিগত ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল, কিন্তু ইসলামি নির্দেশনা অনুযায়ী না কাটা উত্তম।

জিলহজের প্রথম ১০ দিন ইসলামে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ সময়। এই সময়ে বেশি বেশি নেক আমল, রোজা রাখা, তাসবিহ, তাহলিল ও তাহমিদ বলা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। পাশাপাশি কোরবানির প্রস্তুতি নেওয়াও এই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যারা কোরবানি দেবেন, তাদের জন্য উত্তম হবে ১ জিলহজ থেকে কোরবানির আগ পর্যন্ত চুল ও নখ না কাটা। এটি সরাসরি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাতের অনুসরণ হিসেবে গণ্য হয়।

কোরবানি সম্পন্ন হওয়ার পর চুল ও নখ কাটা সম্পূর্ণভাবে বৈধ। বরং অনেক আলেম বলেন, এই কাজটিও ইবাদতের একটি অংশ এবং এর জন্যও আল্লাহর পক্ষ থেকে সওয়াব প্রদান করা হয়। কিছু মত অনুযায়ী, এই চুল ও নখও কোরবানির পশুর অংশের মতো সম্মানজনক গণ্য হয়।

সুতরাং, ইসলামি শরিয়ত অনুসারে বলা যায়—জিলহজের প্রথম দশ দিন চুল ও নখ না কাটা হারাম নয়, তবে রাসুলের (সা.) সুন্নাত পালনের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ আমল। বিভ্রান্তি ও ভ্রান্ত বিশ্বাস থেকে বিরত থেকে সঠিক ইসলামী জ্ঞানে উদ্বুদ্ধ হওয়াই উচিত প্রত্যেক মুসলমানের।

আরও পড়ুন

ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা