গ্রাফিক্স : ভোরের বাণী।
বিজ্ঞাপন
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, জাপানের জনগণ দ্বিধায় রয়েছে যে, চীন যদি তাইওয়ানে হামলা চালায়, টোকিও কি সামষ্টিক আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করবে। কিয়োদো নিউজের জরিপে ৪৮.৮ শতাংশ উত্তরদাতা এই অধিকার প্রয়োগের পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন, আর ৪৪.২ শতাংশ বিপক্ষে মত দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ৬০.৪ শতাংশ মানুষ জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির দেশের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন।
এই জনমত জরিপ প্রকাশিত হয়েছে এমন সময়ে, যখন তাইওয়ান প্রসঙ্গে তাকাইচির মন্তব্যের পর টোকিও-বেইজিংয়ের কূটনৈতিক উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। ৭ নভেম্বর জাপানের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, চীন যদি তাইওয়ানে হামলা চালায়, তা জাপানের জন্য অস্তিত্ব-হুমকির পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে এবং টোকিও সম্ভাব্য সামরিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।
বেইজিং তাইওয়ানকে নিজের অঞ্চল বলে দাবি করে এবং প্রয়োজনে বল প্রয়োগের পথও খোলা রেখেছে। তবে তাইওয়ান সরকার এই সার্বভৌমত্ব দাবি প্রত্যাখ্যান করে। চীনা কর্তৃপক্ষ জাপানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে—যদি তারা তাইওয়ান ইস্যুতে বল প্রয়োগ করে, তবে চীনের কঠোর সামরিক প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হবে। তাকাইচির মন্তব্যের প্রেক্ষিতে চীন এমনকি নাগরিকদের জাপান ভ্রমণ এড়াতে বলেছে।
শুক্রবার টোকিও বেইজিংয়ের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এক শীর্ষ চীনা কূটনীতিকের অনলাইন পোস্টের প্রতিবাদ জানায়। গত এক সপ্তাহ ধরে চলা এই বাগ্যুদ্ধের এটি ছিল সর্বশেষ পর্ব। শনিবার ওসাকার চীনা কনসাল জুয়ে জিয়ান এক সংবাদ প্রতিবেদন শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেন, ‘যে তার নোংরা নাক অন্যের ব্যাপারে গলায় দেয়, তা কেটে ফেলা উচিত।’ পরে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়।
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটিকে চরম অনুপযুক্ত মন্তব্য বলে রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিয়াং বিন বলেছেন, তাকাইচির মন্তব্য অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিপজ্জনক। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “জাপান যদি ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নেয় এবং ঝুঁকি নিয়ে তাইওয়ান প্রশ্নে শক্তি প্রয়োগে হস্তক্ষেপ করে, তবে ইস্পাত-ইচ্ছার পিপলস লিবারেশন আর্মির কাছে বিধ্বংসী পরাজয়ের মুখোমুখি হবে এবং ভয়াবহ মূল্য দিতে হবে।”
বৃহস্পতিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাপানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তাকাইচির বক্তব্যের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এদিকে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যয় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছেন। গত মাসের নীতিবিষয়ক ভাষণে তিনি এই লক্ষ্য সামনে এনেছেন। কিয়োদো নিউজের জরিপে দেখা গেছে, তাকাইচি মন্ত্রিসভার প্রতি জনগণের সমর্থন হার ৬৯.৯ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত মাসের তুলনায় ৫.৫ শতাংশ বেশি।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...