ভোরের বাণী
ছবি: নোয়াখালীর চর মটুয়া কলেজ ছাত্রদল নেতা রিংকু।
বিজ্ঞাপন
নোয়াখালীর সদর উপজেলার চর মটুয়া ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আহমদ উল্লাহ রিংকুর চাঁদা দাবির একটি ভয়েস রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এক মিনিট ৫ সেকেন্ডের ওই রেকর্ড করা ফোনালাপে তাকে সৌদি প্রবাসী জুয়েল নামের একজনের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করতে শোনা যায়।
গত বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) বিকেল থেকে রেকর্ডটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভয়েস রেকর্ডটিতে রিংকু বলেন, "অন বন্ধু, তুই তো আওয়ামী লীগ-বিএনপি মিলাইছস। টেয়া (টাকা) পঞ্চাশ হাজার হাডা। সাদ্দামের থেকে টেয়া কিছু লও। তোরে আমি জীবনে কিছু করিনাই। সাদ্দামরে আই আজায়ালামু, মার্কেট আউট করিমু। কালকে সকালে আমার সেনাবাহিনীর লগে ডিউটি আছে, কলেজের সামনে থাকমু। হিয়ানে যামু, আই অন ঘুম যামু, ৮টায় উঠতে অইবো।"
তিনি আরও বলেন, "৪টি ইউনিয়নের মধ্যে এই কলেজ। ঢাকার যে সভাপতি ছাত্রদলে, হিগা না করলেও প্রতিদিন কল দিবো একবার। তোমার খবর নিতেই থাকমু।"
জানা যায়, গত ২৩ মার্চ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন চর মটুয়া ডিগ্রি কলেজসহ নোয়াখালীর ৩৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের কমিটি অনুমোদন দেন। রিংকু সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ২৪ সদস্যের কমিটিতে দায়িত্ব পান।
সৌদি প্রবাসী জুয়েল বলেন, “আমি নোয়াখালীর ১৯নং পূর্ব চর মটুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। গত ৬ মাস আগে জীবিকার তাগিদে সৌদিতে এসেছি। আমার চাচা সাদ্দাম ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং আওয়ামী রাজনীতির সাথে কিছুটা সম্পৃক্ত। রিংকু একই ইউনিয়নের বাসিন্দা। মূলত আমার চাচাকে এলাকা থেকে তাড়ানোর হুমকি দিয়ে আমার কাছে ফেসবুক মেসেঞ্জারে ৫০ হাজার টাকা এবং একটি মোটরসাইকেল দাবি করে। না দিলে দেশে এলে আমাকে মারধরের হুমকি দেয়।”
চর মটুয়া ডিগ্রি কলেজের সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান শাহীন বলেন, "ভয়েস রেকর্ডটি রিংকুর—এটা ঠিক। লুকানোর কিছু নেই। অন্তত ১০-১৫ জন আমাকে রেকর্ডটি পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর আমি রিংকুকে ২০-২৫ বার কল করেছি, সে রিসিভ করেনি। শুক্রবার দুপুরে যখন রিসিভ করে, তখন জিজ্ঞাসা করি—তুমি এই ব্যাপারে জড়িত কিনা। সে শুধু বলে, ‘ভাইয়া আমি এখন কি করতাম’, বলেই ফোন কেটে দেয়।”
তিনি আরও বলেন, "আওয়ামী লীগ যারা করে, তারা আমাদের ওপর সব কিছু চাপিয়ে দেয়। ভুক্তভোগীর সাথেও আমি কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে—তাদের ডাইরেক্ট থ্রেট দেওয়া হয়েছে। আমি নিজেই হতবাক।"
রিংকুর মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি শাহীন জানান, রিংকু দাবি করেছে—রেকর্ডটি তার নয়। তবে শাহীন বলেন,
“আমি যে কণ্ঠ শুনেছি, সেটা রিংকুর কণ্ঠের মতোই মনে হয়েছে—এটা ঠিক।”
এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী মো. রাসেল বলেন, "ঘটনাটি জানার পর আমি রিংকুকে অনেকবার ফোন দিয়েছি, কিন্তু সে রিসিভ করেনি। পরে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতির সাথে কথা বলি, তিনি বলেন, রেকর্ডটি রিংকুর কিনা তা সে নিশ্চিত নয়।”
