ছবি সংগৃহীত: তিন জমিদার বাড়ি
বিজ্ঞাপন
বাংলার জমিদার প্রথা বিলুপ্ত হলেও কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরের বুকে ছড়িয়ে থাকা তিনটি জমিদার বাড়ি এখনো ইতিহাস-ঐতিহ্যের স্মারক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এসব স্থাপনার মধ্য দিয়ে আমরা ফিরে যেতে পারি শত বছরের পুরোনো সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চিত্রে।
জাহাপুর জমিদার বাড়ি
প্রায় ৪০০ বছর পুরোনো এই জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করেন কমলাকান্ত রায়। বাড়ির মূল ফটকে রয়েছে দুটি মুখোমুখি সিংহমূর্তি, যা এখনো আগত দর্শনার্থীদের অভ্যর্থনা জানায়। এ বাড়িতে অবস্থিত বিশাল জগন্নাথ মন্দিরে এখনো ধর্মীয় আচার পালন করা হয়। স্থাপত্যে মুঘল প্রভাব স্পষ্ট—কারুকার্যময় দেয়াল আর পুরোনো আসবাবপত্র যেন ইতিহাসকে জীবন্ত করে তোলে।
বাঙ্গরা রূপবাবু জমিদার বাড়ি
প্রায় ২৫০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই জমিদারি কুমিল্লার বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নে অবস্থিত। রূপবাবু তাঁর স্ত্রীর নামে ১৮০০ সালে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন, যা তখনকার সমাজে স্বাস্থ্যসেবার বিরল দৃষ্টান্ত। বর্তমানে অবহেলায় চিকিৎসালয় ভবনটি ধ্বংসপ্রায়। রূপবাবুদের দানকৃত ডাকবাংলো এবং ব্যাংক শাখা এখনো সমাজে তাঁদের অবদান স্মরণ করিয়ে দেয়।
রহিমপুরের পোদ্দার জমিদার বাড়ি
নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামে অবস্থিত এই বাড়িটি তুলনামূলক নবীন—প্রায় ১১৫ বছর পুরোনো। পিংকো পোদ্দার বর্তমানে এর দেখাশোনা করছেন। মনমোহন পোদ্দার ছিলেন এই পরিবারের জমিদার। বাড়িটির ইটের কারুকাজ এখনো দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। বাঙ্গরা জমিদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামাজিক সম্পর্কও ছিল এ পরিবারটির।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
এই তিন জমিদার বাড়ি শুধু দর্শনীয় স্থান নয়, বরং বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির জীবন্ত দলিল। যথাযথ সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই স্থাপনাগুলো ধ্বংসের মুখে। সরকার ও স্থানীয় জনগণের সমন্বিত উদ্যোগে এগুলোকে পর্যটন কেন্দ্র এবং ঐতিহাসিক গবেষণার স্থান হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
