ছবি: সংগৃহীত।।
বিজ্ঞাপন
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। দায়িত্ব নেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি আজ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরবর্তীতে বিসিবির পরিচালকদের সঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টার আলোচনা শেষে তিনি যান বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস এসোসিয়েশনের (বিএসজেএ) কার্যালয়ে, যেখানে ক্রীড়া সাংবাদিকদের সঙ্গে অতীতের স্মৃতিচারণে মাতেন।
আশির দশক থেকে ক্রীড়াঙ্গনে সক্রিয় থাকা বুলবুল ক্রীড়া সাংবাদিকদের অনেকের সঙ্গেই দীর্ঘদিনের সখ্যতায় ভর করে ফিরে যান গেন্ডারিয়ার ফুটবল মাঠ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নানা ঘটনায়। তবে বর্তমানে তার বড় পরিচয়—বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি। দায়িত্ব নেওয়ার পর ‘ক্রিকেট ইন বাংলাদেশ’ স্লোগান তুলে ধরে বুলবুল জানান, তার কাজ তিনটি মূল স্তম্ভে দাঁড়িয়ে—শতভাগ ট্রাস্ট, প্রোগ্রাম ও রিচ। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিসিবি ইতোমধ্যেই তিনটি প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছে।
বুলবুল বলেন, “আমরা ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’ আপগ্রেড করব। সবার জন্য হাই পারফরম্যান্স নিশ্চিত করব—শুধু খেলোয়াড় নয়, কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও। এবং সারা দেশব্যাপী বিসিবির কার্যক্রম ছড়িয়ে দেব।” ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার সময় থেকেই আঞ্চলিক সংস্থার কাঠামো নিয়ে আলোচনা থাকলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি, উল্লেখ করে তিনি জানান, “এবার সেটা বাস্তবায়নই আমাদের এক নম্বর প্রায়োরিটি।”
আঞ্চলিক সংস্থার রূপরেখা প্রসঙ্গে বুলবুল বলেন, “আমরা ঢাকায় বসে অন্য অঞ্চলের দল গঠন করতে চাই না। তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে উঠতে হবে। এটি ক্রিকেটের বিকেন্দ্রীকরণ—ক্ষমতার নয়।” রিজিওনগুলোর জন্য ফান্ড নির্ধারণ করা হবে পারফরম্যান্স, খেলোয়াড় সংখ্যা, কোচ ও আম্পায়ারদের উপস্থিতি অনুযায়ী। সেই অনুযায়ী ফান্ডিং মডেলও তৈরি হচ্ছে।
এছাড়া সাবেক তারকা ক্রিকেটারদের দক্ষতা ব্যবহার নিয়েও পরিকল্পনা রয়েছে বুলবুলের। তিনি জানান, “নান্নু ভাই, আকরাম ভাই, লিপু ভাই, হাবিবুল বাশার—এরা সবাই কিংবদন্তি। তাদের অভিজ্ঞতা বিসিবির জন্য বড় সম্পদ।” তবে শুধুমাত্র খেলোয়াড় পরিচয়ে নয়, তাদেরকে দক্ষ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা কোচ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় কাঠামো তৈরি করবেন বলে জানান তিনি।
আধুনিক যুগের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও কথা বলেন নতুন সভাপতি। তিনি জানান, “ওরা বিসিবির সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোচ হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। আমরা এর জন্য ট্রেনিং ও এডুকেশন প্রোগ্রাম চালু করব।”
বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ শেষ হবে অক্টোবর মাসে। নির্বাচনের বিষয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান বুলবুল। তিনি বলেন, “আমরা এখনো ৪৮ ঘণ্টা হয়নি দায়িত্ব নিয়েছি। কাজগুলো বুঝে নেওয়ার পর নির্বাচনী বিষয়ে আলোচনা করব।”
নতুন সভাপতির এই বক্তব্যে স্পষ্ট—তিনি ক্রিকেটে বিকেন্দ্রীকরণ, দক্ষ মানবসম্পদ গঠন ও তৃণমূলের উন্নয়নের মাধ্যমে বিসিবিকে একটি কার্যকর ও সার্বজনীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।