ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিল শুনানি শেষ হয়েছে। দেশের উচ্চ আদালতে আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আগামী ২৭ মে এই বহুল আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করবেন। এতে চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে তার ভাগ্য—বিচারের রায় বহাল থাকবে, না কি কোনো নতুন সিদ্ধান্ত আসবে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বেঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আরও ছয়জন সিনিয়র বিচারপতি, যা মামলাটির গুরুত্ব এবং সংবেদনশীলতা নির্দেশ করে।
এটিএম আজহারের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি আদালতে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার ছিল পূর্বপরিকল্পিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আইন সংশোধন ও ট্রাইব্যুনাল গঠন ছিল ত্রুটিপূর্ণ।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বই ‘ব্রোকেন ড্রিম’-এ এই প্রক্রিয়ার ত্রুটি ও রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এটিএম আজহারুল ইসলামকে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। পরবর্তীতে এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেন। ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ রায় বহাল রাখে। এরপর রিভিউ আবেদন করা হয় ২০২০ সালের ১৯ জুলাই, যা শুনানির জন্য গৃহীত হয় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি। লিভ (আপিলের অনুমতি) মঞ্জুরের পর শুরু হয় এই চূড়ান্ত শুনানি।
আজহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুরে পাক সেনাবাহিনীর সহায়তায় হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন ও গণহত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। ট্রাইব্যুনালের মতে, এসব অপরাধ মানবতাবিরোধী, যার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই যৌক্তিক।
এই মামলার রায় দেশের যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। একদিকে সরকার এই বিচারকে মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের প্রতিফলন হিসেবে দেখছে, অন্যদিকে জামায়াতপন্থীরা দাবি করছেন, এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল।