Logo Logo

জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি


Splash Image

ছবি : সংগৃহীত।

বিএনপি জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানিয়েছে এবং এটিকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।


বিজ্ঞাপন


দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের পথ উন্মুক্ত হয়েছে।

বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “বিএনপি বিশ্বাস করে, এই ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক দলগুলো যে অঙ্গীকার করেছে তা পালনের মধ্য দিয়ে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তরের কাজ শুরু হবে। আমরা নির্বাচনের সময় হিসেবে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিকে নির্ধারণের ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। এ সিদ্ধান্ত দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠার সুযোগ এনে দিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর জনগণ এক ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে। প্রাণ দিয়েছে, শহীদ হয়েছে, গুম-খুনের শিকার হয়েছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পরিকল্পিতভাবে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে তিনটি নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই দীর্ঘ সংগ্রামে আমাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা, কারাদণ্ড, নির্যাতন, গ্রেপ্তার—নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।”

তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ১০ বছরের সাজা দিয়ে ৬ বছর কারাবন্দি করে রাখা হয়। তিনি ৫ আগস্ট মুক্তি পেয়েছেন। তারেক রহমানসহ অনেক নেতাকে আজীবন কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়, যেখানে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। এভাবে বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করে ধ্বংস করতে চেয়েছিল তারা।”

মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়। ফলস্বরূপ ৫ আগস্ট তৎকালীন সরকারপ্রধান পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এর মধ্য দিয়ে একটি নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আশা সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো পুনর্গঠনের উদ্যোগ শুরু হয়। সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কারের কাজ এগিয়ে নেয়া হয়।”

এই ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট ঘোষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’কে বিএনপি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। দলটি মনে করে, এই ঘোষণার মাধ্যমে একটি সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের সম্ভাবনা উন্মোচিত হয়েছে।

বিএনপি নেতাদের মতে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিকে নির্বাচনের সময় হিসেবে নির্ধারণের বিষয়টি তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের লন্ডন বৈঠকে চূড়ান্ত হয়। বিএনপি আশা করছে, নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য।

মির্জা ফখরুল বলেন, “গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে এবং একটি কার্যকর জাতীয় সংসদ গঠনের লক্ষ্যে আমরা সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

তিনি অবশেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা মণ্ডলী এবং সংশ্লিষ্ট সকল সদস্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের বাকি কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...