ধ্বংসস্তূপে গাজা: পুনর্গঠনের হিসাব কাঁপিয়ে দিল জাতিসংঘকে। ছবি:- সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ইসরায়েলের টানা দেড় বছরের আগ্রাসনে আজ প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও দুই লাখ মানুষ। হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ, বসতবাড়ি— কোনো কিছুই রক্ষা পায়নি দখলদার বাহিনীর নির্বিচার বোমা বর্ষণ থেকে।
জাতিসংঘের প্রজেক্ট সার্ভিস অফিসের পরিচালক জোর্গে মোরেইরা দা সিলভা জানিয়েছেন, গাজার পুনর্গঠনে প্রয়োজন হবে অন্তত ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। তাঁর ভাষায়, “গাজার প্রায় ৮০ শতাংশ অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। যুদ্ধ শেষ হলে প্রথম অগ্রাধিকার হবে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নতুনভাবে অবকাঠামো গড়ে তোলা।”
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, গাজার ধ্বংসযজ্ঞ এতটাই ভয়াবহ যে পুরো অঞ্চল পুনর্গঠনে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ ও পানির লাইন পর্যন্ত— সবকিছুই ধ্বংস হয়ে গেছে। মানবিক সহায়তা পৌঁছানোও এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে আশার কথা জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। তিনি বলেন, “আজ যদি সব পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছায়, তাহলে আজই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হতে পারে।” তাঁর মতে, যুদ্ধবিরতির আলোচনায় চারটি মূল বিষয় নিয়ে কাজ হচ্ছে—
ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি, ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের সীমারেখা, মানবিক সহায়তা ও যুদ্ধবিরতির শর্তাবলি।
বর্তমানে মিসরের শার্ম এল-শেইখে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে। এতে অংশ নিয়েছেন কাতার, মিসর এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিনিধি দল।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল-ফাত্তাহ এল-সিসি কায়রোতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, “শার্ম এল-শেইখে চলমান আলোচনার অগ্রগতি খুবই আশাজাগানিয়া। সবাই এখন শান্তি চায়।”
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি ও পুনর্গঠন একসঙ্গে শুরু না হলে গাজার মানবিক সংকট আরও গভীর হবে। খাদ্য, পানি, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সহায়তার ঘাটতি এখন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবুও আশার কথা— আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে গাজা একদিন আবারও দাঁড়িয়ে যেতে পারবে, ঠিক আগের মতোই প্রাণবন্ত হয়ে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...