বিজ্ঞাপন
এবারই প্রথম জেলার সবকটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচারে নেমেছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পাঁচজন প্রার্থী থাকলেও বিএনপি ও জামায়াতের তুলনায় তাদের প্রচার তুলনামূলকভাবে কম। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।
সুনামগঞ্জ-১ (জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর)
এই আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ১ হাজার ৬৪৬ জন। বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসাধারণ সম্পাদক, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুল হক। তিনি ধানের শীষের পক্ষে নিয়মিত প্রচার চালাচ্ছেন এবং ৩১ দফার পক্ষে জনমত গঠনে সভা-সমাবেশ ও উঠান বৈঠক করছেন।
তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন জেলা জামায়াতের আমির তোফায়েল আহমদ খান। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনে সদ্য যোগ দিয়ে ৮-দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে এ আসনে নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সাবেক বিএনপি নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) চিত্তরঞ্জন তালুকদারও প্রচার চালাচ্ছেন।
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই–শাল্লা)
এই আসনে ভোটার ৩ লাখ ৬ হাজার ৬৫৩ জন। বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরী। শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ হলেও তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
জামায়াতের শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে পরিচিত সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি মোহাম্মদ শিশির মনির দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কাজ করছেন। এছাড়া জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শোয়াইব আহমদ বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করতে আগ্রহী। ইসলামী আন্দোলনের জেলা সেক্রেটারি সোহেল আহমদ এবং সিপিবির নিরঞ্জন দাস (খোকন) ও ঋতেষ দেব স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ)
এই আসনে ভোটার ৩ লাখ ৭২ হাজার ৭১১ জন। প্রবাসী অধ্যুষিত এ আসনে দীর্ঘদিন পর বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ নিয়মিত সভা-সমাবেশ ও উঠান বৈঠক করছেন।
তবে মনোনয়নবঞ্চিত জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন। জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে প্রচারে রয়েছেন সিলেট মহানগর শাখার মজলিশে শুরা সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইয়াসীন খান। খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শাহীনুর পাশা চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলনের মুফতি আব্দুল হাই এবং জমিয়তের প্রার্থী মাওলানা হাম্মাদ গাজীনগরীও প্রচার চালাচ্ছেন। এদিকে জমিয়তের মুফতি ওয়াক্কাস অংশের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সৈয়দ তালহা আলম এবি পার্টিতে যোগ দিয়ে সেখান থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ-৪ (সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর)
এই আসনে ভোটার ৩ লাখ ৭২ হাজার ২৭৩ জন। বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুল। তবে মনোনয়নবঞ্চিত জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন।
জামায়াতের প্রার্থী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামস্ উদ্দীন। এছাড়া গণঅধিকার পরিষদের সওগাত উছমানী চৌধুরী, জমিয়তের মাওলানা মখলিছুর রহমান চৌধুরী এবং ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি মুফতি শহীদুল ইসলাম পলাশীও প্রচারে সক্রিয়।
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক ও দোয়ারাবাজার)
এই আসনে ভোটার ৫ লাখ ১৭ হাজার ৭৩৯ জন। বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন। জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে সিলেট মহানগর শাখার মজলিশে শুরা সদস্য আব্দুস সালাম আল মাদানী এলাকায় প্রচার চালাচ্ছেন। জমিয়তের প্রার্থী নুরুল হক এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আলী আকবর সিদ্দিকীর নামও আলোচনায় রয়েছে।
জোট প্রসঙ্গে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তৈয়্যিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, জেলার পাঁচটি আসনেই তাদের প্রার্থী রয়েছে, তবে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে কয়েকটি আসনে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে। ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি মুফতি শহীদুল ইসলাম পলাশী জানান, তারা সুনামগঞ্জ-১ ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনে ৮-দলীয় জোটের প্রার্থী হতে আগ্রহী এবং আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
জেলা জামায়াতের আমির তোফায়েল আহমদ খান বলেন, দীর্ঘদিনের প্রস্তুতির পর হঠাৎ করে জোটের নতুন প্রার্থী চাপিয়ে দেওয়া হলে স্থানীয়রা তা মেনে নেবে না। অন্যদিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন আশা প্রকাশ করে বলেন, মনোনয়ন নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও শেষ পর্যন্ত সবাই ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...