বিজ্ঞাপন
অভিযোগ রয়েছে, প্রতি জেলেকে ৮০ কেজি চাল দেওয়ার নিয়ম থাকলেও বাস্তবে দেওয়া হচ্ছে ৭৫ থেকে ৭৮ কেজি পর্যন্ত। আর এসব অনিয়মে খাদ্য গুদামের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।
সোমবার সকালে পাথরঘাটা খাদ্য গুদামে গিয়ে দেখা যায়, সদর ইউনিয়নের ২৫০০ জন জেলের মধ্যে চাল বিতরণ চলছে। তবে অনেক জেলেই অভিযোগ করেন, নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে দুই থেকে পাঁচ কেজি পর্যন্ত কম চাল দেওয়া হচ্ছে।
চোখের সামনেই এসব অনিয়ম হলেও খাদ্য গুদামের কর্মকর্তাদের পক্ষ নেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা। তাদের বক্তব্য, “দেশে কোনো কিছুই শতভাগ ঠিকঠাক হয় না।”
জেলেরা অভিযোগ করেন, মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা কষ্টে দিন পার করছেন। অথচ সরকারপ্রদত্ত সহায়তার চাল থেকেও তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। একাধিক জেলে জানান, বস্তার গায়ে লেখা ৫০ কেজির চাল বাস্তবে ৪৭-৪৮ কেজিতে নেমে আসছে।
পাথরঘাটা উপজেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ১১ হাজার ৪১১ জন জেলেকে ৮০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা রয়েছে।
সাবেক ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন মোল্লা বলেন, “যদি প্রতি জেলে মাত্র দুই কেজি কম চালও পায়, তাহলে মোট গায়েব হয় প্রায় ২২ টন চাল। এটা কোনভাবেই ছোট বিষয় নয়।”
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ নেওয়ার পেছনে রয়েছে স্বার্থসংশ্লিষ্টতা, এমন তথ্যও উঠে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার ডাকুয়ার নির্দেশে কম ওজনের চাল নতুন বস্তায় সেলাই করে বিতরণ করা হয় এবং এই অনিয়মে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
অঞ্জন কুমার ডাকুয়া অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “জাহাজ থেকে চাল ওঠানোর সময় কিছু চাল পরে যেতে পারে, এ কারণে ওজন কম হচ্ছে।”
তবে তার বিরুদ্ধে পূর্বেও একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, ঈদুল ফিতরের সময় বরাদ্দকৃত ১০ কেজির চালের জায়গায় ৮ থেকে ৮.৩ কেজি চাল বিতরণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। এছাড়া আমন মৌসুমে ধান সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে বরগুনার আমতলীতে উপখাদ্য পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ধান ক্রয়ে দুর্নীতির কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ১৯৫ বস্তা ধান জব্দ ও ১০ দিনের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ তানভীর হোসেন বলেন, “বিষয়টি জানার পর অঞ্জন কুমার ডাকুয়াকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে এবং তিনি ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার অঙ্গীকার করেছেন।
-ইব্রাহীম খলীল,পাথরঘাটা প্রতিনিধি।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...