ভোরের বাণী
ভান্ডারিয়ার অভিযুক্ত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান নান্না এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে দাখিলকৃত অভিযোগপত্র
বিজ্ঞাপন
পিরোজপুর প্রতিনিধি:পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার পশ্চিম পশারীবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান নান্না শিকদারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধা সনদ গ্রহণ এবং রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মিরাজ শিকদার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে দায়ের করা অভিযোগে জানান, নান্না শিকদার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন, বরং তিনি একসময়ের রাজাকার। তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ নম্বর ০৬০৫০৫০৬৪। অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, সাব-সেক্টর কমান্ডার (সেক্টর-৯) মেজর জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ ২০০২ সালের ২ আগস্ট এক প্রত্যয়নপত্রে নান্না শিকদারকে রাজাকার হিসেবে শনাক্ত করেন।
এছাড়াও ১৯৭১ সালে রাজবিহারী ডাক্তার বাড়ি থেকে ৬৫ হাজার টাকা ও ৪০ ভরি স্বর্ণ লুটের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একই ঘটনায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় নান্নার বড় ভাই মানিক শিকদার ছিলেন ১০ নম্বর আসামি। এই মামলা এখন আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে।
ভান্ডারিয়া উপজেলার সাবেক ইউএনও ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি ৮৪ জন রাজাকারের একটি তালিকা জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠান, যেখানে ৬০ নম্বরে নান্নার নাম অন্তর্ভুক্ত। অভিযোগে আরও দাবি করা হয়, নান্না ও তার পরিবার প্রকৃত পক্ষে ১৩ কাঠা জমির মালিক হলেও বর্তমানে ৮০০ কাঠা জমির মালিক হয়েছেন, যা মুক্তিযুদ্ধকালীন লুটপাট থেকে অর্জিত।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে অভিযোগ করার পর মিরাজ শিকদারকে দুইবার ডাকা হয় এবং অর্থ দাবি করা হয় বলে তিনি জানান। টাকা না দিলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় বটে, তবে সেখানেও মনগড়া তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ভান্ডারিয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বাচ্চু বলেন, “নান্নার যুদ্ধ করার কোনো প্রমাণ আমাদের কাছে নেই। বরং তার বাবা রাজাকার হিসেবে জেল খেটেছেন। এসব তথ্য থাকা সত্ত্বেও কিভাবে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হলেন, তা আমাদের বোধগম্য নয়।”
অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান (নান্না) শিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগগুলোকে "ষড়যন্ত্রমূলক" আখ্যা দিয়ে এড়িয়ে যান এবং ব্যক্তিগত শত্রুতার অভিযোগ করেন।