ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
সারা দেশে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে অস্বাভাবিক উচ্চ তাপমাত্রায় বাড়ছে হিট স্ট্রোক, পানিশূন্যতা, ডায়রিয়া, হেপাটাইটিস, ঠাণ্ডা-কাশি, এলার্জি এবং ত্বকের সংক্রমণের মতো সমস্যার সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে কীভাবে শরীরকে সুস্থ রাখা যায়, তা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. দ্বিপক রায়। তিনি বলেন, “এই গরমে সাবধানতা ও সচেতনতা ছাড়া সুস্থ থাকা কঠিন।” তাঁর মতে, কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস মেনে চললেই তাপপ্রবাহজনিত সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকা সম্ভব।
চলুন জেনে নিই এই গরমে সুস্থ থাকার ১২টি কার্যকর পরামর্শ:
১. দিনে বারবার বিশুদ্ধ পানি ও ঘরে তৈরি শরবত, যেমন ডাবের পানি, লেবুর শরবত, তেঁতুল পানি ইত্যাদি পান করুন।
২. রাস্তার পাশের খোলা পানীয় বা শরবত এড়িয়ে চলুন। এতে কলেরা, হেপাটাইটিস বা ডায়রিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৩. ঘাম ও পানিশূন্যতা পূরণে খাবার স্যালাইন উপকারী। তবে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৪. অতিরিক্ত তেল ও রেড মিটজাতীয় খাবার (গরু বা ছাগলের মাংস) এ সময় পরিহার করা জরুরি।
৫. প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে শাক-সবজি খান। এতে থাকা ভিটামিন ও খনিজ উপাদান শরীরকে সতেজ রাখে।
৬. প্রতিদিন গোসল করুন। তবে বাইরে থেকে এসে সরাসরি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল না করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল করুন।
৭. যতটা সম্ভব ঘরের ভিতরে থাকুন। অকারণে বাইরে বের না হওয়াই শ্রেয়।
৮. শারীরিক পরিশ্রম ও অতিরিক্ত ব্যায়াম এ সময় এড়িয়ে চলুন। এটি শরীরকে দ্রুত দুর্বল করে দিতে পারে।
৯. পাতলা সাদা সুতি কাপড় পরিধান করুন। এটি তাপ শোষণ করে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে।
১০. ধূমপান পরিহার করুন। কারণ এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বাড়ায়।
১১. চা, কফি ও অ্যালকোহল পান করা থেকেও বিরত থাকুন। এসব পানীয় শরীরে পানিশূন্যতা বাড়ায়।
১২. গরমে মন-মেজাজ খারাপ হওয়াটা স্বাভাবিক। তাই মানসিকভাবে শান্ত ও স্থির থাকার চেষ্টা করুন।
এই দিকনির্দেশনাগুলো মানলে গরমের এই দুর্বিষহ পরিস্থিতিতেও আপনি নিজেকে ও পরিবারকে সুস্থ রাখতে পারবেন। দেশজুড়ে এই অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহে আমাদের সবাইকে সচেতনভাবে জীবনযাপন করতে হবে। স্বাস্থ্যই এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার।