ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বড় পরিবর্তনের পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তি বা সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা যুক্ত করে “সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫”-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
রোববার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে গৃহীত সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যমান সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এ সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বিধান না থাকায় আইনে সময়োপযোগী সংশোধন প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
বর্তমান সংশোধনীতে মূল যে বিষয়গুলো যুক্ত হয়েছে, তা হলো—
🔹 সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে তফসিলে তালিকাভুক্ত করার পাশাপাশি তাদের কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার বিধান।
🔹 সন্ত্রাসী প্রচারণা বা উস্কানিমূলক কন্টেন্ট অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা সরকারকে প্রদান।
🔹 যুক্তিসঙ্গত প্রমাণের ভিত্তিতে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে নিষিদ্ধকরণের নির্দেশ কার্যকর করার বিধান।
সরকার মনে করছে, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে শুধু সন্ত্রাসীদের ব্যক্তিগত কার্যক্রম নয়, বরং সন্ত্রাসবাদের পিছনে থাকা সংগঠন ও অর্থায়নকারী সত্তাগুলোকেও কার্যকরভাবে প্রতিহত করা যাবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, “এই সংশোধনীটি বাস্তবায়িত হলে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় একটি বড় অগ্রগতি হবে। অনলাইনে জঙ্গিবাদী প্রচারণা বন্ধে আইনগত ভিত্তি দৃঢ় হবে।”
তবে এ নিয়েও কিছু প্রশ্ন উঠছে। নাগরিক অধিকার সংস্থাগুলো চাইছে, যাতে নতুন বিধানের প্রয়োগে কোনো ব্যক্তির মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বা রাজনৈতিক মতাদর্শের নামে হয়রানি না হয়। আইনটির প্রয়োগ যেন যথাযথ ও সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে হয়—এমন নিশ্চয়তা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইনের অপব্যবহার রোধে পর্যাপ্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা রাখা হবে এবং স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার ভারসাম্য রক্ষা করেই আইনটি কার্যকর করা হবে।
এই সংশোধিত অধ্যাদেশ আগামীকাল প্রজ্ঞাপন আকারে জারি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।