ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
“যদি সাংবাদিকদের ৩০ হাজার টাকার ন্যূনতম বেতন দিতে না পারেন, তাহলে পত্রিকা বন্ধ করে দিন”— এমনই কড়া বার্তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত 'মিট দ্য প্রেস' অনুষ্ঠানে সোমবার (১২ মে) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি সাংবাদিকদের জীবনের মানোন্নয়নে যথাযথ বেতনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
শফিকুল আলম বলেন, “একজন সাংবাদিকের পেশাদার মানসিকতা গড়ে ওঠে উপযুক্ত সম্মান ও পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে। ৩০ হাজার টাকার নিচে বেতন হলে একজন সাংবাদিক টিকে থাকতে পারেন না— এটা শুধু টাকার বিষয় নয়, এটি পেশার মর্যাদার সঙ্গেও সম্পর্কিত।”
তিনি পত্রিকা মালিকদের উদ্দেশে বলেন, “যদি সাংবাদিকদের সম্মানজনক বেতন দিতে না পারেন, তাহলে পত্রিকা প্রকাশের অধিকার আপনার থাকা উচিত নয়।”
সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোর ভূমিকা নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, “সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো গত ১৫ বছর ধরে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা না রেখে পূর্বাচলে প্লট পাওয়ার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত ছিল। ফলে প্রকৃত সাংবাদিকরা বঞ্চিত হয়েছেন এবং মালিকদের দয়ায় টিকে থাকতে বাধ্য হয়েছেন।”
অনিয়মের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, “অনেক অনলাইনে কিংবা প্রিন্ট মিডিয়ায় দেখা যায়, অন্যদের লেখা কপি করে সংবাদ ছাপানো হয়। এটা কোনোভাবেই ভালো সাংবাদিকতা হতে পারে না। তথ্য অধিদপ্তর—ডিএফপি—এর ভেতরে বহু অনিয়ম চলছে, সেখানেও কথা বলা দরকার।”
রাজনৈতিক ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর মানুষ স্বস্তি পেয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী অন্তত ১৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বাস্তবে সংখ্যা আরও বেশি। অথচ কোনো অনুশোচনার চিহ্ন নেই তাদের মধ্যে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “তাদের অপশাসনের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছে, তাদের জঙ্গি বলে দমন করা হয়েছে। এ ধরনের রাজনীতি মানুষের আস্থা হারিয়েছে। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ হওয়াকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে, যদিও কেউ কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারে।”
অনুষ্ঠানে ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন সোহেলসহ সংগঠনের নির্বাহী সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যের মাধ্যমে শফিকুল আলম কেবল সাংবাদিকদের দাবি-দাওয়ার পক্ষে সরব হননি, বরং পেশার মর্যাদা রক্ষার জন্য কাঠামোগত পরিবর্তনের বার্তাও দিয়েছেন।