বিজ্ঞাপন
বাড়ছে ঢেউয়ের তীব্রতা, উপকূলীয় এলাকায় থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
সকালের দিকে আকাশ ঘন মেঘাচ্ছন্ন থাকায় পুরো জেলার আবহাওয়া বিষণ্ন হয়ে উঠেছে। নদী ও সাগর মোহনায় পানি স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে হঠাৎ ঝড়ো বা দমকা হাওয়ার আশঙ্কা থাকায় পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ০৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী ভোরের বাণীকে জানান, “বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তাই সকল মাছ ধরার ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
আবহাওয়া পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় পটুয়াখালী উপকূল থেকে অধিকাংশ মাছধরা ট্রলার নিরাপদে তীরে ফিরে এসেছে। শুধুমাত্র ২-১টি ট্রলার এখনো সমুদ্রে থাকলেও বিকেলের মধ্যেই তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা চলছে বলে জানিয়েছেন আলীপুর মৎস্য আড়ৎদার মালিক সমিতির সভাপতি জলিল ঘরামী।
জেলেদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। মাঝি শাহাবুদ্দিন বলেন, “গত পরশুদিন সমুদ্রে গিয়েছিলাম। সমুদ্র উত্তাল থাকায় ভোররাতে ফিরে আসি। ২ লাখ ২০ হাজার টাকার জ্বালানি ও বাজার সদায় নিয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু ফিরে এসেছি মাত্র ৮০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করে। ক্ষতির পরিমাণ ভয়াবহ।”
আরেক জেলে খবির বলেন, “৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর আমরা এখনো ঠিকমতো সমুদ্রে যেতে পারিনি। আবহাওয়া একদিন ভালো থাকে, আবার খারাপ হয়ে যায়। দুই দিন ফিশিং করতে না পারলে পরিবার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।”
কাদের মাঝি জানান, “লাম্বা জালে কিছু মাছ ধরা পড়লেও আমাদের ছান্দি জালে এবার তেমন কিছুই পাইনি। বাজার সদায় করে সমুদ্রে যাই, কিন্তু আবহাওয়ার কারণে বারবার ফিরে আসতে হয়। আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার দুর্যোগ অনেক বেশি।”
উপকূলীয় এলাকার মানুষজন ও মাছধরার ওপর নির্ভরশীল শ্রমজীবী শ্রেণির লোকজনের মধ্যে এখন আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আবহাওয়ার বৈরিতার এই ধারাবাহিকতা দীর্ঘমেয়াদে আরও বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
প্রতিবেদক - জাকারিয়া জাহিদ, কলাপাড়া, পটুয়াখালী।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...