ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ২৬৬টি হত্যা মামলার দায় সরকার নিচ্ছে না। তিনি বলেন, "এই মামলা সরকার করায়নি, বরং কারা দায়ের করেছে, সেটাই খতিয়ে দেখা দরকার।"
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ‘ফ্যাসিবাদ মুক্ত গণমাধ্যম চাই’ আয়োজিত “গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী গণমাধ্যমের হালচাল” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ বক্তব্য দেন। ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে শফিকুল আলম বলেন, "আমরা এধরনের অনুসন্ধানমূলক রিপোর্টকে স্বাগত জানাই। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাংবাদিককে হয়রানি বা গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়নি।"
এক্রিডিটেশন কার্ড ইস্যুতে সরকার ইতিমধ্যেই নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে বলেও জানান প্রেস সচিব। "আগে ১৬৭ জন সাংবাদিকের কার্ড বাতিল করা হয়েছিল, সেটি ছিল একটি ভুল। এখনকার নীতিমালা সাংবাদিকবান্ধব এবং অনেক সহজ। বিদেশ সফরের জন্য সরকারের অনুমতি বা প্রশংসা করা আর প্রয়োজন নেই। কেবল পেশাদার সাংবাদিকরাই এই কার্ড পাবেন," বলেন তিনি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, অতীতে ছাত্রলীগ ও কিছু এমপির কাছে সাংবাদিক পরিচয়ের কার্ড ছিল, যা দিয়ে তারা সচিবালয়ে ঢুকতেন। এই অনিয়ম বন্ধে এখন কেবল প্রকৃত সাংবাদিকদের মধ্যেই এক্রিডিটেশন কার্ড বিতরণ করা হবে, যাতে গণমাধ্যমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, “গত নয় মাসে বাংলাদেশে সাংবাদিকতা একটি অবাধ পরিবেশে পরিচালিত হয়েছে। সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন, যদিও কিছু ক্ষেত্রে চাকরি হারানোর ঘটনা ঘটেছে—যা ছিল সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম মালিকদের সিদ্ধান্ত।”
রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিচয়ের বাইরে সাংবাদিকতার পেশাগত পরিচয়কেই মুখ্য হিসেবে দেখার আহ্বান জানান তিনি। “আপনার মতামত যদি ভুল হয়, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষ বিভ্রান্ত হতে পারে। এতে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়বে,” বলেন শফিকুল আলম।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ ও ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম। বক্তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি সংবাদপত্র মালিকদেরও দায়শীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।