পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। ছবি : সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একসময় একই দেশের অংশ ছিল। কিন্তু ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বিচ্ছেদের পর দীর্ঘ সময় বাংলাদেশের নেতৃত্ব—বিশেষত ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার—ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে থেকেছে এবং ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত রেখেছিল।
তবে গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এবং তিনি ভারতে চলে যাওয়ার পর ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কে নতুন উষ্ণতা ফিরে আসে। বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায়ও দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়।
চলতি বছরের এপ্রিলেও ইসহাক দারের ঢাকা সফরের পরিকল্পনা ছিল, তবে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে তা স্থগিত করা হয়। নতুন সূচি অনুযায়ী, আগামী ২৩ আগস্ট তিনি ঢাকায় এসে বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক সমন্বয় আরও জোরদারের উপায় নিয়ে আলোচনা করবেন। সফরকালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তার আরও কিছু কর্মসূচি রয়েছে বলেও জানা গেছে।
গত মাসে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ পারস্পরিক কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশে নীতিগতভাবে সম্মত হয়। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি ও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মধ্যে বৈঠকে এ অগ্রগতি হয়।
এর আগে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালোচ ১৫ বছরের বিরতির পর পররাষ্ট্র দপ্তরের পরামর্শ সভায় অংশ নিতে ঢাকা সফর করেন। এছাড়া গত মার্চে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
ফেব্রুয়ারিতে দীর্ঘ বিরতির পর সরকার-থেকে-সরকার সরাসরি বাণিজ্য শুরু হয়, যার অংশ হিসেবে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়। গত জানুয়ারিতে দুই দেশের সেনাবাহিনী বাইরের প্রভাব মোকাবিলা এবং “টেকসই অংশীদারত্ব” বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেয়।
২০২৪ সালের নভেম্বরে করাচি থেকে চট্টগ্রামে একটি কনটেইনারবাহী জাহাজ পৌঁছায়—যা কয়েক দশকের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি প্রথম পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল ছিল।
এর আগে, গত বছরের ডিসেম্বরে মিসরের কায়রোতে ডি-৮ উন্নয়নশীল দেশগুলোর সম্মেলনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস ১৯৭১ সালের বিচ্ছেদের সময় থেকে ঝুলে থাকা সমস্যাগুলো সমাধানের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই বিষয়গুলো বারবার ফিরে আসে। চলুন এগুলো মিটিয়ে সামনে এগিয়ে যাই।”
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...