Logo Logo
জাতীয়

ওসি প্রদীপের ফাঁসি! আদালতের ঐতিহাসিক রায়ে কাঁপছে দেশ – কী ঘটেছিল সেই রাতে?


ভোরের বাণী

Splash Image

ছবি. সংগৃহীত

টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।


বিজ্ঞাপন


২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি ঘোষিত এই রায়ে আলোচিত মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার বিচারিক পর্বের অবসান ঘটে। আদালতের এই রায়ে দেশে তৈরি হয়েছে নতুন আলোড়ন এবং মানবাধিকার, আইন ও ন্যায়বিচার নিয়ে আবারো প্রশ্ন উঠেছে।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর সিনহা। টেকনাফ-মেরিন ড্রাইভ সড়কে একটি চেকপোস্টে পুলিশ গুলি চালায় বলে জানায় প্রশাসন। ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোচিত হয়। পরবর্তীতে তদন্তে উঠে আসে, এটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

সিনহা হত্যা মামলায় মোট ১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল রায়ে দুই প্রধান আসামি ওসি প্রদীপ এবং পরিদর্শক লিয়াকতকে ফাঁসির আদেশ দেন। একই মামলায় আরও ছয় পুলিশ সদস্য ও সোর্সকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকি সাতজনকে খালাস দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে হাইকোর্টের অনুমোদন প্রয়োজন, যাকে বলা হয় “ডেথ রেফারেন্স”। এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যায় না। বর্তমানে হাইকোর্টে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে এই রায়। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের আইনজীবীরা দ্রুত ফাঁসি কার্যকরের জন্য আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন।

সিনহা হত্যা ছাড়াও ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে আরও একটি আলোচিত মামলা রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা। ২০২২ সালের ২৭ জুলাই চট্টগ্রামের একটি আদালত এই মামলায় ওসি প্রদীপকে ২০ বছরের এবং তার স্ত্রী চুমকি রানী দাশকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দেন। মামলার তদন্তে উঠে আসে, প্রদীপের নামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ রয়েছে, যা তার ঘোষিত আয় উৎসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

এই রায়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দ্রুত ফাঁসি কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছেন। সাধারণ নাগরিকরাও এই রায়কে আইনের শাসনের বিজয় হিসেবে দেখছেন, যা ভবিষ্যতে পুলিশের দায়মুক্তির সংস্কৃতিকে প্রশ্নের মুখে ফেলবে বলে অনেকে মনে করছেন।

ওসি প্রদীপের ফাঁসির রায় কেবল একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, বরং পুরো পুলিশি ব্যবস্থায় চলমান অন্যায় ও জবাবদিহির অভাবের বিরুদ্ধেও একটি কঠোর বার্তা। এটি প্রমাণ করে, রাষ্ট্র চাইলে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে যেকোনো অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে সক্ষম। এখন শুধু অপেক্ষা উচ্চ আদালতের চূড়ান্ত অনুমোদনের।

-নিউজ ডেস্ক।

আরও পড়ুন

ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা