ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের মাইক্রোক্রেডিট ব্যবস্থাকে উন্নত ও টেকসই করতে এখন সময় এসেছে আলাদা ‘মাইক্রোক্রেডিট ব্যাংক আইন’ প্রণয়নের। তার মতে, এনজিও-ভিত্তিক পরিচালনার সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে নতুন একটি সামাজিক বাণিজ্যিক ব্যাংক গঠনের পথ সুগম করতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছি যেখানে মাইক্রোক্রেডিট নিয়ে নতুনভাবে ভাবা জরুরি হয়ে পড়েছে। এনজিও কাঠামোর মধ্যে থেকে প্রকৃত ব্যাংকিং পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। এজন্য দরকার আলাদা আইন এবং একটি পূর্ণাঙ্গ সামাজিক ব্যবসা ভিত্তিক ব্যাংক।”
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এনজিওগুলো শুধুমাত্র সদস্যদের সঞ্চয় নিতে পারে, কিন্তু বাইরের কারো ডিপোজিট গ্রহণ করতে পারে না। এই সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের বারবার দাতা সংস্থার কাছে যেতে হয়। “একটি প্রতিষ্ঠান যদি নিখুঁতভাবে ব্যাংকিং করে, তবে সে কেন হাত পাতবে? তার নিজস্ব সক্ষমতা থাকা উচিত,”— বলেন ড. ইউনূস।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা আরও জানান, যেসব প্রতিষ্ঠান মাইক্রোক্রেডিট ব্যাংক হিসেবে কাজ করবে, তাদের স্পষ্টভাবে ব্যাংক লাইসেন্স দিতে হবে। একই সঙ্গে আইনে উল্লেখ থাকতে হবে যে এসব ব্যাংক ‘সামাজিক বাণিজ্যিক ব্যাংক’ হিসেবে পরিচালিত হবে। এটি হবে মূলত উদ্যোক্তা তৈরির একটি কাঠামো, যেখানে তরুণ-তরুণীরা চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের উদ্যোগে ব্যবসা গড়ে তুলবে।
“মানুষ স্বভাবতই উদ্যোক্তা, সে জন্মগতভাবে ব্যবসায়ী হতে চায়। আমাদের দায়িত্ব হলো, তাকে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ সহায়তা ও কাঠামো গড়ে দেওয়ার। তাহলেই কর্মসংস্থান তৈরি হবে নিজের চেষ্টায়, সরকারের চাকরির অপেক্ষা করতে হবে না,”— বলেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং এমআরএ-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ।