ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
গোপালগঞ্জ শহরের থানাপাড়ায় পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে আপন ভাইকে বঞ্চিত করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে ভুক্তভোগীর অপর ভাইদের বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, থানাপাড়া নিবাসী মৃত আ: খালেক মুন্সীর তিন ছেলে অহিদ মুন্সী, তোহিদ মুন্সী ও রহিত মুন্সীর মধ্যে ছোট ভাই রহিত মুন্সীকে কৌশলে তার অংশ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
প্রায় ৮ বছর আগে তাদের মা মারা যাওয়ার পর বড় দুই ভাই অহিদ ও তোহিদ মিলে ব্যাংক লোনের জন্য ছোট ভাই রহিত মুন্সীর অংশ লিখে নেন। দাবি করা হয়, পৈত্রিক সম্পত্তিতে বড় মার্কেট নির্মাণের জন্য ব্যাংক লোন প্রয়োজন, আর লোনের জন্য একক মালিকানা থাকা বাধ্যতামূলক। ভাইদের প্রতি বিশ্বাস রেখে তাই রহিত মুন্সী তার অংশ লিখে দেন। কিন্তু পরে তাকে সম্পূর্ণরূপে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়।
রহিত মুন্সী বিয়ে করার কিছুদিন পর থেকেই তার ভাইরা তার স্ত্রী ও তার উপর বিভিন্নভাবে মানসিক অত্যাচার শুরু করে। এবং তার শিশু সন্তানকে হত্যার হুমকি দিলে রহিত মুন্সী স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন এবং আশ্রয়ণ প্রকল্পে আশ্রয় নেন। বর্তমানে তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। রহিত মুন্সী উত্তরাধিকার সূত্রে বিপুল সম্পত্তির মালিক হওয়া সত্ত্বেও একবেলা খেয়ে না খেয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি। বরং সম্পত্তির ভাগ চাইতে গেলে তার ভাইরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ রহিত মুন্সীর।
যে সম্পত্তির কথা বলে তার অংশ লিখে নেওয়া হয়েছিল, সেখানে আজও কোনো সুবিশাল মার্কেট তৈরি হয়নি। তবে সেখানে দোকান ও বাড়ি ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা হয়। প্রায় ৪০ বছর ধরে এই টাকা জমা হলেও রহিত মুন্সী এর এক টাকাও পাননি।
রহিত মুন্সীর অভিযোগ, তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়াসহ সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার মূল পরিকল্পনাকারী তার বড় ভাই অহিদ মুন্সী, যিনি গোপালগঞ্জ পুরাতন বাজারে চায়ের দোকান চালানোর পাশাপাশি অবৈধ চোলাই মদের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।
রহিত মুন্সী বলেন— "আমি এতিম ছেলে, আমার ভাইয়েরাই আমার অভিভাবক ছিল। আমার বড় ভাই ওহিদ মুন্সী আমাকে বলে আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে বহুতল মার্কেট নির্মানের উদ্দেশ্যে ব্যাংক ঋণের প্রয়োজন এবং তিনি আরো বলেন, এই ব্যাংক ঋণ পেতে হলে এই জমির মালিক একজন হতে হবে। এই বলে বড় ভাই অহিদ মুন্সী আমার পৈত্রিক সম্পত্তির অংশ লিখে নেয়। লিখে নেয়ার পর আজ অব্দি সেখানে কোন মার্কেট তৈরি হয় নাই। তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোন কাজ না হওয়ায় আমি আমার অংশ তাদের নিকট ফেরত চাই। কিন্তু তারা আমার অংশ ফেরত না দিয়ে উল্টো আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি ফেরত চাই।"
রহিত মুন্সী আরো বলেন, “এ ঘটনাটি কেবল পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধই নয়, বরং এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা।”
তিনি বলেন, “প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”