ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক নৌযাত্রা। ছবি- সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
গাজার নিপীড়িত মানুষদের জন্য মানবিক সহায়তা নিয়ে সমুদ্রপথে যাত্রা শুরু করেছে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গ্লোবাল সমুদ ফ্লোটিলা (Global Sumud Flotilla)। এতে অংশ নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার খ্যাতিমান লেখক জুকিসওয়া ওয়ানার ও কর্মী-লেখক জ্যারেড স্যাক্স। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস—“আমরা ভেসেছি আশাকে বাঁচিয়ে রাখতে। আশা হারানো মানে গাজার মানুষদের ছেড়ে দেওয়া।”
প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় জীবনযাত্রার মৌলিক উপকরণ—খাদ্য, পানি, ওষুধ, আশ্রয় ও চলাচলের স্বাধীনতা—ব্যাপকভাবে সংকুচিত। ইসরায়েলের অব্যাহত অবরোধে এ ভূখণ্ড এখন মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের চিকিৎসক, শিল্পী, ধর্মীয় নেতা, আইনজীবী ও অধিকারকর্মীরা একত্রিত হয়ে গঠন করেছেন গ্লোবাল সমুদ ফ্লোটিলা। উদ্দেশ্য একটাই—অবরোধ ভেঙে অন্তত কিছু খাদ্য ও ওষুধ গাজায় পৌঁছে দেওয়া।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এবার যোগ দিয়েছেন ১০ জন কর্মী। খ্রিস্টান, মুসলিম, ইহুদি কিংবা নাস্তিক—ধর্ম-জাতিগত বিভেদ ভুলে সবাই দাঁড়িয়েছেন এক মানবিক লক্ষ্যকে ঘিরে।
এর আগেও একাধিক মানবিক নৌযান আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় ইসরায়েলি বাহিনী আটক করেছে। গত জুনে ‘মাদলিন’ এবং জুলাইয়ে ‘হান্দালা’ নামের দুটি জাহাজ অবরুদ্ধ করা হয়। কর্মীদের অভিযোগ, তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় এবং খাদ্য-ওষুধ গাজার জনগণের কাছে পৌঁছাতে দেওয়া হয়নি।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ) ইসরায়েলকে জরুরি সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার মতে, আজও ইসরায়েল সেই আদেশ মানেনি।
জুকিসওয়া ওয়ানার ও জ্যারেড স্যাক্স বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিসংগ্রাম যেমন বৈশ্বিক সংহতির মাধ্যমে গতি পেয়েছিল, তেমনি ফিলিস্তিনের সংগ্রামেও আজ বিশ্ববাসীর পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন। তাদের মতে, “এটি কেবল নৌযাত্রা নয়, বরং ন্যায়ের পথে এক অবিচল পদযাত্রা।”
এবারের অভিযানে ৪০টিরও বেশি দেশ থেকে ৫০টিরও অধিক নৌযান যোগ দিয়েছে। শত শত মানুষ একসঙ্গে এগিয়ে এসেছেন গাজার জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে।
দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মীরা জানান, তারা সংখ্যায় কম হলেও তাদের যাত্রা কোটি মানুষের ন্যায়বোধকে প্রতিনিধিত্ব করে। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোর ভাষায়, যা ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারীরা উদ্ধৃত করেছেন:
“শান্তি কোনো কল্পনা নয়, শান্তি একটি দায়িত্ব।
সূত্র- আল জাজিরা
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...